টিকা গ্রহনে উদ্বুন্ধ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। সরকার এরইমধ্যে ২১ কোটি টিকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় স্থাপিত এক হাজার শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল চালু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। আগামী শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এটির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ফিল্ড হাসপাতালটি চালু হবে বলে পরিদর্শন শেষে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করোনাক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ফিল্ড হাসপাতালটিতে ২০০ আইসিইউ, এইচডিইউসহ এক হাজার শয্যা থাকছে।’
টিকা গ্রহনে উদ্বুন্ধ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। সরকার এরইমধ্যে ২১ কোটি টিকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’
ঈদযাত্রায় মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ঈদে গ্রামে যাওয়া-আসার কারণে করোনা সংক্রমণ ৫-৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনায় এখন যারা ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ গ্রাম থেকে আসা বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
১৮ বছর হলেই পাবে টিকা
১৮ বছরের ওপরে প্রত্যেককেই টিকাদানের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্নে সচল রাখতে এবং সকল নাগরিককে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার উদ্দেশ্যে এখন থেকে ১৮ বছরের ওপরে দেশের সকল নাগরিককেই ভ্যাকসিন দেয়া হবে।’
শনিবার বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর সাথে হওয়া এক ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই সরকারের আইসিটি বিভাগের আওতাধীন জাতীয় সুরক্ষা অ্যাপে ১৮ বছরের ওপরে সব নাগরিক যেন রেজিস্ট্রেশন করতে পারে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনাও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
এর আগে ১৯ জুলাই জানানো হয়েছিলো যে, ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সীরা করোনা টিকা নিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। এই সময়ে, টিকা নেওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ছিল ৩৫ বছর।
দেশে এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণহারে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। এর পরদিন করোনার টিকার জন্য নিবন্ধনের জন্য বয়সসীমা হিসেবে ৪০ বছরকে নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
সর্বপ্রথম সর্বনিম্ন ৫৫ বছর বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সরকারের হাতে প্রায় ১ কোটির উপরে ভ্যাকসিন রয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই আরও প্রায় দুই কোটি ভ্যাকসিন সরকারের হাতে চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এভাবে চীন থেকে ৩ কোটি, রাশিয়া থেকে ৭ কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসন এর ৭ কোটি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ভ্যাকসিন আসবে।’
আগামী বছরের প্রথম ভাগেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে বলেও আশা স্বাস্থ্য মন্ত্রীর।
দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিতে সক্ষম হবে সরকার বলে মনে করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।
করোনাক্রান্তদের জন্যে প্রাইভেট হাসপাতালে বাড়ছে শয্যা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের কাছে কোভিডের তৃতীয় ধাপ মোকাবিলায় হাসপাতালের কোভিড স্পেশালাইজড বিছানার সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।
এসময়, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি মুবিন খান করোনাক্রান্তদের জন্যে দুই হাজার নতুন শয্যা বাড়ানো হবে জানিয়েছেন।
গ্রামাঞ্চলে কোভিড রোগীদের শনাক্ত করার উদ্যোগ হিসেবে সরকার জেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়াও খুব দ্রুত চার হাজার চিকিৎসক, চার হাজার নার্স, ৫০০ এনেসথেসিয়া কর্মীসহ প্রচুর টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কাজও পুরোদমে এগিয়ে চলেছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সভায় আরো জানানো হয়, বর্তমানে বেসরকারি সেক্টরে হাসপাতালে প্রায় ৬০০টি আইসিইউ, ৬০০টি এইচডিইউ, প্রায় ৭০০ হাই ফ্লো নেজাল ক্যানুলা এবং প্রায় ৬০০ ভেন্টিলেটর দিয়ে কোভিড চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।