যশোর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে শনিবার দিবাগত রাতে সর্বোচ্চ ৯৪ টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার হয়েছে। যা চরম অস্বাভাবিক বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নিমো’র দুজন প্রতিনিধি আজ পরীক্ষা করে কোন লিকেজ পাইনি অক্সিজেন লাইনে। এজন্য একদিনে কিভাবে অতিরিক্ত অক্সিজেন ব্যয় হল এটা নিয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার আক্তারুজ্জামান।
হাসপাতালে যেখানে একরাতে ২৫ টি সিলিন্ডার ব্যবহার হয় সেখানে প্রায় চারগুণ ৯৪ টি সিলিন্ডার কেন ব্যবহার হলো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কর্মকর্তারা। এ কারণে অক্সিজেন সঞ্চালন লাইন পরীক্ষায় ডাকা হয় সংযোগ দেয়া প্রতিষ্ঠান নিমোকে।
এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের শনিবার রাতে কেন অক্সিজেনের অস্বাভাবিক ব্যবহার হলো সেই সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার কথা ছিল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।
যশোর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের দুইটি জোনে বর্তমানে করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন ১শ’ ৩২ জন। এরমধ্যে রেডজোনে ৭৯ ও ইয়োলোজোনে ৫৩ জন রয়েছেন।
এর বাইরে আইসিইউ’র রোগীতো রয়েছেই। এসব রোগীর জন্যে ১শ’ ৪৮ টি বড় ও ৩শ’ ২৫ টি ছোট আক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। এসব বড় সিলিন্ডাওে ছয় হাজার আটশ’ লিটার অক্সিজেন থাকে বলে সূত্র জানিয়েছে।
হাসপাতাল সুপার আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, করোনার চিকিৎসায় ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে ৪০-৫০ জনের মিনিটে ১০ থেকে ৫০ লিটার অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।
আইসিইউ’র কয়েকজন রোগীকে মিনিটে ৪০ থেকে ৬০ লিটার এবং আইসিইউ’র বাকিদের মিনিটে ২৫ থেকে ৩০ লিটার অক্সিজেন সরবরাহ করছেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা।
এছাড়া, অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের মিনিটে পাঁচ-ছয় লিটার অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে এক রাতে সর্বোচ্চ ২৫ টি বড় সিলিন্ডার অক্সিজেন লাগে। অথচ সেখানে লেগেছে ৯৪ টি বড় সিলিন্ডার। যেটি চরম অস্বাভাবিক বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দূর করতে এই ট্যাংকির সংযোগ দেয়া হলে ৭০ লাখ লিটার অক্সিজেন যুক্ত হবে হাসপাতালের সঞ্চালন লাইনে।
তখন যশোর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট তৈরি হবে না বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
শনিবার রাতে ট্যাংকির সাথে সঞ্চালন লাইনের সংযোগ দেয়ার কথা ছিল নিমো’র প্রতিনিধিদের। কিন্তু সেটার কাজ শেষ হলেও পুরোপুরি উপযোগী হয়নি।
সেজন্য আগামীকাল চালু হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার আক্তারুজ্জামান জুয়েল।
এ বিষয়ে হাসপাতালের সুপার আক্তারুজ্জামান জুয়েল বলেন, এক রাতে ৯৪ টি বড় সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হওয়া রীতিমতো অস্বাভাবিক।
কারণ সর্বোচ্চ ২৫ টির বেশি সিলিন্ডার এ পর্যন্ত ব্যবহার হয়নি। সঞ্চালন লাইনের কোনো সমস্যার জন্যে এমনটি হলো কিনা জানতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে।
তারা আজ বিকালে এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কোন লিকেজ পাইনি। এজন্য একদিনে কিভাবে অতিরিক্ত অক্সিজেন ব্যয় হল এটা নিয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, যশোর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ৪৮ টি বড় ও ৩শ’ ২৫ টি ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
এর সাথে সাজেদা ফাউন্ডেশন দুই মাসের জন্যে ১শ’ টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়েছে। সব মিলিয়ে ১শ’ ৪৮ টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে করোনা চিকিৎসায়।