প্রভাতি সংবাদ ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় গুলাব ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ এবং প্রতিবেশি ওড়িশার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনেছে। রোববার সন্ধ্যার দিকে এই ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ ওই দুই প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়েছে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) এক টুইট বার্তায় জানানো হয়েছে।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে আইএমডি বলেছে, আগামী তিন ঘণ্টার মধ্যে ওড়িশার গোপালপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তমের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় গুলাব।
টুইটে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, উপকূলীয় এলাকার স্থলভাগে পৌঁছেছে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের অগ্রভাগ। এভাবে অন্ধ্র প্রদেশের উত্তর উপকূল এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ উপকূলীয় ওড়িশায় এই ঘূর্ণিঝড়ের আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী তিন ঘণ্টার মধ্যে কলিঙ্গপত্তম এবং গোপালপুরের উপকূল অতিক্রম করবে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের কেন্দ্রটি কলিঙ্গপত্তম থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থান করছে।
এর আগে, ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) ওড়িশার গোপালপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তমের মধ্যবর্তী এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড় ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটারের বেশি বাতাসের গতিবেগ নিয়ে আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দেয়। যদিও রোববার সকালের দিকে এক সতর্কবার্তায় ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৫ কিলোমিটার হতে পারে বলে জানিয়েছিল আইএমডি।
ভারতের ত্রাণ বিভাগের মহাপরিচালক সত্য নারায়ণ প্রধান বলেছেন, ওড়িশায় জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৩টি দল এবং অন্ধ্র প্রদেশে পাঁচটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের আশঙ্কায় পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে পূর্বাঞ্চলে ট্রেন চলাচল বাতিল, পথ পরিবর্তন অথবা সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ওড়িশার সরকার ইতোমধ্যে রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার সাতটি জেলায় লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এই এলাকার গ্যানজাম এবং গজপতি জেলায় লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ জোরদার করা হয়েছে।
গত চার মাস আগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের ওড়িশায় আঘাত হানে। ইয়াসের ক্ষত শুকাতে না শুকাতে দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় গুলাব ওড়িশায় আঘাত হানছে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বলেছেন, উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ সাত জেলা— গঞ্জাম, গজপতি, কান্ধমাল, কোরাপুট, রায়গড়া, নবারংপুর এবং মালকানগিরিতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যাতে কোনও প্রাণহানি না ঘটে সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পিকে জেনা সাংবাদিকদের বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘরে; বিশেষ করে পাকা বাড়িতে থাকতে বলেছেন। এই সময় ঘূর্ণিঝড়টি ওই অঞ্চল দিয়ে যাবে।