More

    প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:

    ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোমা পুঁতে রেখে হত্যাচেষ্টার ঘটনার মামলায় ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম, আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমান (৪৪)।

    গতকাল মঙ্গলবার (১ মার্চ) রাজধানীর খিলক্ষেত বাজার মসজিদের সামনে থেকে এ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে উগ্রবাদী বই, দুটি মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স উদ্ধার করা হয়।

    আজ বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারী আদর্শ কলেজ মাঠে অবস্থিত সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাড (ডহর পাড়া)-এর পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়।

    সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক রানা শীর্ষ জঙ্গি মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল।

    ঘটনাটি প্রকাশ পেলে বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। আজিজুল হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ছদ্মবেশে তিনি সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন।

    সিটিটিসি প্রধান জানান, আজিজুল হক রানা ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে ভর্তি হয়।

    এ সময় সে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য ও মুফতি হান্নানের অনুসারী মাওলানা আমিরুল ইসলামের সংর্স্পশে আসে। মাওলানা আমিরুল ইসলাম তাকে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

    ওই মাদ্রাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালামসহ হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ-এর বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যদের যাতায়াত ছিল। ওই মাদ্রাসায় নিষিদ্ধ সংগঠনটির সদস্যরা গোপন বৈঠক করত।

    সিটিটিসি কর্মকর্তারা আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক সংগঠনে যোগদানের পর অন্য ছাত্রসহ প্রশিক্ষণ ও তালিম নেওয়ার জন্য হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি ইজহারের চট্টগ্রামের লালখান মাদ্রাসায় যায় এবং তালিম গ্রহণ করে।

    তালিম শেষে সেখানে সে বোমা তৈরি, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। মুফতি হান্নান সংগঠনের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য সাহসী জিহাদী বিশ্বস্ত কয়েকজন লোক সংগ্রহের জন্য মাওলানা আমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়।

    মাওলানা আমিরুল ইসলাম তখন আজিজুল হক রানাকে নির্বাচন করেন। আমিরুল ইসলাম তাকে একটি পত্র লিখে দিলে পত্রসহ সে গোপালগঞ্জ বিসিক এলাকায় সোনার বাংলা সাবান ও মোমবাতি তৈরির কারখানায় পাঠায়।

    পরে মুফতি হান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মাওলানা আমিরুল ইসলামের দেওয়া পত্রটি তাকে হস্তান্তর করে। মুফতি হান্নান তাকে সংগঠনের নিয়মকানুন সম্পর্কে বুঝিয়ে দেয় এবং আজিজুল হকের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনাম ‘শাহনেওয়াজ’ প্রদান করে।

    সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, আজিজুল হক নতুন নাম শাহনেওয়াজ পরিচয়ে আনুমানিক ১৫ দিন মোমবাতি প্যাকিং এর কাজ করে।

    বিশ্বস্ততা অর্জন করলে কারখানার পেছনে একটি কক্ষে গোপন বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুমতি পায়। কারখানায় মোমবাতি ও সাবান তৈরির আড়ালে বোমা তৈরির কাজ চলত।

    বোমা তৈরির কাজে আজিজুল হকসহ মোঃ ইউসুফ মোসহাব, মেহেদী হাসান, আঃ ওয়াদুদ, ওয়াসিম আক্ত, তারেক হোসেন, মোঃ মহিবুল, মফিজুর রহমান, শেখ মোঃ এনামুল হক, আনিসুল ইসলাম, আনিস প্রমুখ জড়িত ছিল।

    সিটিটিসি প্রধান বলেন, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ার কলেজ মাঠে সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাডের পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখে।

    মোঃ আজিজুল হক রানা বা শাহনেওয়াজ বা রুমান (৪৪) মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে এবং মাওলানা আমিরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে।

    সিটিটিসি প্রধান আরো জানান, আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মপেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপন করে রাখে।

    অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যায়। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে টেইলারিং, মুদি দোকানদার, বই বিক্রেতা, ড্রাইভ্রার এবং সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্পপ্যাড বানানোর কাজ করত।

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img