প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:
উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
গত ২৭ জানুয়ারি তিনি ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তিরত করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
কিছুদিনের মধ্যেই কভিডমুক্ত হয়েছিলেন তিনি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর কোমরের ভাঙা হাড়ের অস্ত্রোপচার করা হয় হয়েছিল । কিন্তু গতকাল সোমবার রাত থেকে শুরু হয় পেটে ব্যথা, কমতে থাকে রক্তচাপ।
আজ (মঙ্গলবার) সকালে তাঁর অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আইসিইউতে। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলা গানের স্বর্ণযুগের অন্যতম কিংবদন্তি ছিলেন সংগীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ ছিল কয়েক প্রজন্ম। ৫০ বছরেরও বেশি সময় নানা ভাষার ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ছবির গানের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদি সংগীতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর সংগীত শিক্ষার মূল কাণ্ডারি ছিলেন তাঁর বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। কলম্বিয়া থেকে তাঁর প্রথম রেকর্ড করা গান গিরীন চক্রবর্তীর কথায় ও সুরে ‘তুমি ফিরায়ে দিয়াছো’ ও ‘তোমার আকাশে ঝিলমিল করে’।
১৯৪৮ সালে প্রথমবার তিনি রাইচাঁদ বড়ালের সংগীত পরিচালনায় প্লেব্যাক করেন। ছবির নাম ছিল ‘অঞ্জনগড়’। সে বছর তিনি আরো তিনটি আধুনিক গান রেকর্ড করে সংগীতজগতে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেন এই ভবিষ্যতের কিংবদন্তি।
১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে। আর এ বছরেই বর্তমান ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে তাকে সম্মান জানালে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।