প্রভাতি সংবাদ ডেস্ক:
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ চলতি সপ্তাহে পুরো দেশের দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী সংগঠন তালেবান। এরপরই রাজধানীর সকল নিরাপত্তার দায়িত্ব কট্টরপন্থি হাক্কানি নেটওয়ার্কের যোদ্ধাদের হাতে তুলে দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।
মিডিয়াটি বলছে, কট্টরপন্থি গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদাসহ বিদেশি বিভিন্ন জিহাদি সংগঠনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এ দিকে পশ্চিমা দেশগুলোর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব হাক্কানি নেটওয়ার্কের হাতে চলে যাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ উদ্বেগজনক। এটি তালেবান নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির পুরোপুরি বিপরীত। কারণ ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের শাসনামলের চেয়ে এবার মধ্যপন্থির পথ বেছে নেওয়া হবে বলে আগেই প্রতিশ্রুত দিয়েছিল তালেবান।
অপর দিকে এসবের মাধ্যমে আফগানিস্তানে ফের আল-কায়েদার সম্রাজ্জবাদ ফিরে আসার সম্ভাবনাকেও বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, তালেবানের এই সিদ্ধান্ত গেল বছর কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার সময় গোষ্ঠীটির নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে। কারণ সে আলোচনায় তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আফগানিস্তান আর কখনও বিদেশি জিহাদিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হবে না।
মিডিয়াগুলো বলছে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খলিল আল-রহমান হাক্কানিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেতা হিসেবে চিহ্নিত করে মার্কিন অর্থ বিভাগ। তখন তাকে গ্রেফতার কিংবা তথ্য প্রদানের জন্য ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এছাড়া জাতিসংঘের সন্ত্রাসীদের তালিকায়ও নাম রয়েছে এই হাক্কানি নেটওয়ার্কের।
অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ব্রিটিশ কূটনীতিক আইভর রবার্টস এরই মধ্যে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন, হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যদের কাবুলের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। যা কার্যতই ‘শিয়ালকে মুরগির খামারের দায়িত্ব দেওয়ার সামিল।’
এ দিকে কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রজেক্ট বা সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী প্রকল্পের সিনিয়র উপদেষ্টা আইভর রবার্টস দীর্ঘদিন যাবত অলাভজনক সংস্থা এবং চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, তালেবানের এই পদক্ষেপে আমি বিস্মিত। তার ভাষায়, আমি ভেবেছিলাম, তালেবান নেতারা এর থেকেও আরও বেশি বুদ্ধি রাখেন।