নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগের শর্তেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দন্ডের কার্যকারিতা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার মন্ত্রণালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শর্ত অনুযায়ী, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
মন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়ার পরিবার, মানে তার ছোট ভাই শর্তসাপেক্ষে সময়টা বর্ধিত করার একটি আবেদন করেছিলেন। আমরা সেই আবেদন যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদন দিয়েছি।
“তিনি (খালেদা জিয়া) নিজ বাসায় থেকে যেভাবে চিকিৎসা নিতে চান, সেভাবে চিকিৎসা নেবেন। তবে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। আগে যেসব শর্ত ছিল, সেসব শর্ত বহাল থাকবে।”
দুর্নীতির দুই মামলায় দন্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। দন্ডের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলে তিনি কারামুক্ত হন।
এরপর গতবছর সেপ্টেম্বরে এবং চলতি বছরের মার্চে আরও দুই দফায় ছয় মাস করে বাড়ানো হয় সাজা স্থগিতের মেয়াদ। এ নিয়ে মোট তিন দফায় ১৮ মাস সেই মেয়াদ বাড়ানো হলো।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল পরিবারের পক্ষ থেকে।
আইন মন্ত্রণালয় সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দিলেও বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি বলে গত ১২ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন।
তিনি আগেই বলেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই। তাকে কারাগারে ফিরে তবেই আবেদন করতে হবে।
সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা আছে, যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তসাপেক্ষে শাস্তি স্থগিত করতে পারে অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।
নিয়ম অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।