করোনা’র মধ্যেই হাঁটের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে
প্রভাতী বার্তাকক্ষ:
দেশে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ অবস্থায় থাকার মধ্যেই রাজধানীতে পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আগামী ১৭ জুলাই, থেকে রাজধানীতে বসতে যাচ্ছে পশুর হাট।
চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত অর্থাৎ ২১ জুলাই অব্দি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির পশুর হাট বসবে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি’র মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। কোরবানির পশুর হাট পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্য, ইজারাদার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০টি মিলে রাজধানীতে অস্থায়ী হাট বসবে মোট ১৯টি । এর বাইরে উত্তরে স্থায়ী হাট গাবতলি হাট এবং দক্ষিণের স্থায়ী হাট সারুলিয়াও পশু বেচাকেনা চলবে। হাট চলাকালে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।
করপোরেশন কর্তা’রা জানিয়েছে, ঈদুল আজহার দিনসহ মোট পাঁচদিন এসব হাটে পশু কেনা-বেচা করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য শর্তাবলী মানা সাপেক্ষে অস্থায়ী পশুরহাট ইজারাপ্রাপ্তদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা শহরে স্থায়ী এবং অস্থায়ীভিত্তিতে কোরবানীর পশুর হাট বসার অনুমতি দেওয়া হবে।
পশুর হাটগুলো মনিটরিং করার জন্য ১৪ সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে রাজধানীতে এ। এই কমিটিতে আছে ১২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ২ জন প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।
প্রতিটি হাটে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। তাদেরকে গেঞ্জি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক মাস্ক দেয়া হবে। তাছাড়া, সকল হাটে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখা হবে।
প্রত্যেকটি হাটে থাকবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা এবং তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র। এমনটাই জানিয়েছেন উত্তর সিটি’র মেয়র।
‘হাটগুলোতে শারীরিক দূরত্ব সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতাদেরকে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।’
হাটগুলোতে ঢোকার ও বেরোনোর পথ আলাদা রাখতে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করতে নির্দেশ দেন তিনি।
মেয়র জানান, ‘কোরবানির হাটের পশুগুলো অনলাইনেও কেনাবেচার ব্যবস্থা রাখা হবে।’
এদিকে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশে পালিত হচ্ছে কঠোর শাটডাউন। কোরবানীর পশু কেনাবেচার হাট বন্ধ করে দিয়েছিলো প্রশাসন।
কোরবানি ঈদের আগ দিয়ে বিক্রি রমরমা থাকার কথা থাকলেও এখন পশু বিক্রি নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে খামারীদের মধ্যে।
উত্তর ঢাকার হাটের অবস্থান
দক্ষিণ সিটি এলাকার স্থায়ী পশু হাট গাবতলি। আর ৯ টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে রয়েছে, উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং এলাকা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়, ভাটারা অস্থায়ী পশুর হাট, খিলক্ষেতের পূর্বাচল ব্রিজসংলগ্ন এলাকা; ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন যমুনা হাউজিং কোম্পানি কাওলা শিয়ালডাঙ্গা এলাকা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকা; মোহাম্মদপুর বছিলা রাজধানী হাউজিং এলাকা, স্বপ্নধারা হাউজিং ও বছিলা গার্ডেন সিটি এলাকা পশুর এ হাট বসবে।
দক্ষিণ সিটির হাটের অবস্থান
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ তার এলাকায় ১৩টি অস্থায়ী পশুর হাটের তিন পর্যায়ে দরপত্রের আহ্বান করে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের দরপত্র শেষে ১০টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া প্রদান করা হয়। কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ের দরপত্র শেষে নতুন ইজারা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায়।
এই তিন হাট হলো- কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের এলাকা, শ্যামপুর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা।
দক্ষিণ সিটিতে ১০টি অস্থায়ী হাট হলো আফতাব নগর এলাকা; গোলাপবাগ এলাকা; হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ; পোস্তগোলা শ্মশানঘাট এলাকা, মেরাদিয়া বাজার এলাকা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল এলাকা, উত্তর শাহজানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের এলাকা, দনিয়া কলেজ এলাকা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব এলাকা এবং লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব এলাকা।
ডিএসসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাজারে অবশ্যই ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ ও চলাচল করতে হবে। নতুবা আইনানুগ ব্যবস্থা সহ ইজারা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।