নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের সব সিটি করপোরেশনকে নিজস্ব আয়ে চলার জন্য স্বাবলম্বী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এখন আপাতত প্রকল্প দেওয়া হলেও অবকাঠামোগতভাবে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশনগুলো প্রায় অনুদাননির্ভর। প্রধানমন্ত্রী সিটিকরপোরেশনগুলোকে নিজেদের আয়ে চলতে ও আয় বুঝে ব্যয় করতে বলেছেন। আমরা আর সিটি করপোরেশনগুলোকে টানবো না।
প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা স্মরণ করেছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো পথ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময় স্বাবলম্বী ও স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। তার সময় আর্থিক ঘাটতি ছিল না ও চমৎকার ছিল সবকিছুই। সবার উচিত আয় বুঝে ব্যয় করা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। ড্রেনেজের পানি সরাসরি নদীতে না ফেলা, সিইটিপি স্থাপন করার কথাও বলেছেন। এছাড়া ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘হার পাওয়ার’ করার নির্দেশ দিয়েছেন। উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বন তৈরি এবং বহাদ্দার হাটের খাল খনন প্রকল্পটি এবারই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা যাতে আর সংশোধনের জন্য না আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। ফলে এর প্রভাব সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। গাড়ি-ঘোড়া বাড়ছে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। ফলে এর প্রভাব সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। একটু সহ্য করতে মেট্রোরেল হলে যানজট কমে যাবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রূপপুর প্রকল্প, গোমতি, শীতলক্ষ্যা বিজ নির্মাণ এবং মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প দাম ও মেয়াদ না বাড়িয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে। তেমনি কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো দীর্ঘ দিনে শেষ হচ্ছে না।’
তিনি জানান, ব্যক্তিগত দুর্নীতি আছে, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি নেই। আবার ব্যক্তিগত দুর্নীতিকে সরকার দমন করছে। সেটিও দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
শীতকালে যখন বেশি দুধ উৎপাদন বেশি হয়, তখন গুঁড়ো দুধ অথবা বিকল্প খাদ্য তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘দুধের বিকল্প ব্যবস্থা বাড়তে কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।’
একনেক সভায় দুগ্ধ ঘাটতি উপজেলায় দুগ্ধ সমবায়ের কার্যক্রমে ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, দুধের বহুমুখী ব্যবহার করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পনির ও ঘিসহ নানা পণ্য হতে পারে। শীতকালে দুধের উৎপাদন বাড়ে। আমরা বিদেশ থেকে গুঁড়া দুধ আমদানি করি। সুতরাং বেসরকারিখাত গুঁড়া দুধের প্রকল্প নিতে পারে।