নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঋণ খেলাপির দায়ে বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক পদ হারালেন সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে ঋণখেলাপি হওয়ায় তার পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। বিষয়টি জানিয়ে রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঋণ সংক্রান্ত অনিয়ম ও ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) প্রতিবেদন নেতিবাচক হওয়ায় রন হক সিকদারের পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে দুই জন পরিচালকের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। রন হক সিকদারের বিষয়ে সিআইবি থেকে ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। এ কারণে পরিচালক পদে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি।
এর আগে, ২০১৯ সালের ১৯ মে রন ও তার ভাই দিপু সিকদারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। বাবার জানাজায় অংশ নিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে গ্রেপ্তার হন রন সিকদার।
পরিচালক পদ হারানোর খবরে রন হক সিকদার সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তবে গভর্নর ফজলে কবিরের দেখা না পেয়ে তিনি ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
প্রায় এক দশক ধরে ন্যাশনাল ব্যাংক পরিচালনা করছে সিকদার পরিবার। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন জয়নুল হক সিকদার। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে তিনি মারা যান। এরপর ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন জয়নুল হক সিকদারের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার।
ব্যাংকটির পরিচালক পদে আছেন এ দম্পতির সন্তান পারভীন হক সিকদার, রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। এর মধ্যে ঋণ খেলাপি হওয়ায় রন হক সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংক পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেন।
তবে তার খেলাপি ঋণ কত, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
রন সিকদার একটি মামলার আসামি।
২০২০ সালের ১৯ মে রন ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করে এক্মিম ব্যাংক।
এতে রন ও তার ভাই দিপু হক সিকদোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে একটি ঘরে বন্দি করে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। পরে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে মামলা করার আগে থেকেই দুই ভাই দেশের বাইরে চলে যান। পলাতক অবস্থায় তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে বিচারক ভর্ৎসনাও করেন তার আইনজীবীদের।
দেশে ফিরে গ্রেপ্তার হওয়ার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেয়ে পরদিন বাবার জানাজায় অংশ নেন রন। পরে বাড়ে জামিনের মেয়াদ
বাবার মৃত্যুর পর রন দেশে ফিরে গ্রেপ্তার হক গত ১২ ফেব্রুয়ারি। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বাবার জানাজায় অংশ নিতে জামিন দেয়া হয়।
পরে গত ১০ মার্চ জামিনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো হয়। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হয় কথা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। সেদিন শুনানি শেষে তাকে স্থায়ী জামিন দেয়া হয়।