প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:
রাশিয়া ক্রমাগত উচ্চ-প্রোফাইল সামরিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ইউক্রেনে পুতিনের আক্রমণ স্থগিতকালে এক জিআরইউ সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
ক্যাপ্টেন আলেক্সি গুশচাক,৩১ একজন রাশিয়ান গুপ্তচর ছিলেন। তিনি ইউক্রেনে একটি গোপন সামরিক অভিযানের সময় নিহত হন। ইউক্রেনের মারিউপোল বন্দরে ধ্বংসাবশেষের মধ্যে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ক্রেমলিন এখন পর্যন্ত তিনজন প্রধান জেনারেল সহ ১২ জন কমান্ডারকে হারিয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা তাদের উদ্ভট কৌশলের সমালোচনা করেছে।
রাশিয়ার যুদ্ধে হতাহত যারা-
১. মেজর জেনারেল আন্দ্রেই কোলেসনিকভ: ২৯তম সম্মিলিত সেনা বাহিনীর কমান্ডার
২. মেজর জেনারেল ভিটালি গেরাসিমভ: রাশিয়ার ৪১ তম সেনাবাহিনীর প্রথম ডেপুটি কমান্ডার যিনি সিরিয়া এবং ক্রিমিয়ায় অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।
৩. মেজর জেনারেল আন্দ্রেই সুখোভেটস্কি: সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ৪১ তম সম্মিলিত আর্মস আর্মির ডেপুটি কমান্ডার।
৪. কর্নেল আন্দ্রেই জাখারভ: কিয়েভের কাছে ইউক্রেনীয় অতর্কিত হামলায় নিহত হন।
৫. লেফটেন্যান্ট কর্নেল দিমিত্রি সাফ্রোনভ: মেরিন ব্রিগেডের নেতা যিনি ইউক্রেনীয় বাহিনী চেরনিহিভ পুনরুদ্ধার করার পর নিহত হন।
৬. লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডেনিস গেøবভ: বিমান হামলার সৈন্যদের লিডার, চেরনিহাইভে নিহত হন।
৭. কর্নেল কনস্ট্যান্টিন জিজেভস্কি: বিমান হামলার সৈন্যদের লিডার, ইউক্রেনের দক্ষিণে নিহত হন।
৮. জেনারেল ম্যাগোমেদ তুশায়েভ: চেচেন বিশেষ বাহিনীর লিডার, হোস্টোমেলের কাছে একটি অতর্কিত হামলায় নিহত হন।
৯. ভ্লাদিমির ঝোঙ্গা: ক্রেমলিন দ্বারা সমর্থিত নব্য-নাৎসি স্পার্টা ব্যাটালিয়নের লিডার।
১০. জর্জি দুডোরভ: ১০৬ তম তুলা গার্ডস এয়ারবর্ন ডিভিশনের ১৩৭ তম রেজিমেন্টের জন্য রিকনেসান্স কোম্পানির ডেপুটি কমান্ডার।
১১. আলেক্সি আলেশকো: প্যারাট্রুপ ইন্টেলিজেন্স অফিসার যিনি মর্যাদাপূর্ণ রিয়াজান গার্ডস হায়ার এয়ারবর্ন স্কুলের স্নাতক ছিলেন।
গুশচাকের মৃত্যুর পর রাশিয়া এক বিবৃতিতে বলেছে: ‘সামরিক অভিযানের কঠোর গোপনীয়তার কারণে টিউমেন নায়কের মৃত্যুর পরিস্থিতি প্রকাশ করা হয়নি।যদিও রাশিয়া ‘হাজার হাজার’ মৃত্যুর কথা গোপন করেছিল, তারপরেও এমন এক সামরিক অফিসারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ছবিতে তার বাবাকে দেখানো হয়েছিল যাকে পূর্ণ সামরিক সম্মান এবং গার্ড অফ অনারের সাথে সমাহিত করা হয়েছিল ।
যেদিন সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মারা যান সেদিন তিনি রাশিয়ায় তার স্ত্রী এবং মা উভয়ের সাথে কথা বলেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাদের অভিনন্দন জানাতে ফোন করেছিলেন কিন্তু একই দিন সন্ধ্যায় তারা জানতে পারে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে মরণোত্তর সম্মানে ভূষিত করা হবে।
যুদ্ধে নিহত রাশিয়ান সৈন্যদের সঠিক সংখ্যা পাওয়া কঠিন। ইউক্রেন দাবি করেছে ১২,০০০ নিহত হয়েছে, কিন্তু কয়েক দিন ধরে এই সংখ্যা আপডেট করেনি।
ইউরোপীয় এবং আমেরিকান অনুমান কম – ২,০০০ থেকে ৬,০০০ এর মধ্যে – যখন রাশিয়া মাত্র ৫০০ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। মস্কো যুদ্ধে নিহতদের কোনো মোট আপ-টু-ডেট তথ্য দেয়নি এবং নিহতদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের নাম বলেছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন জেনারেল রয়েছে।
সম্প্রতি মিডিয়াতে ফেব্রæয়ারির শেষে নিহত সৈন্যদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। রাশিয়া তাদের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে আনতে দুই সপ্তাহ বা তার বেশি সময় নিচ্ছে, যাদের মধ্যে অনেকেই রক্তাক্ত যুদ্ধের অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে রাশিয়ান দূরপ্রাচ্যে বাস করে।
‘এটা কবে থামবে, আমরা প্রায় প্রতিদিনই কফিন দেখছি?’ একজন মন্তব্য করেছেন। ‘আমাদের ছেলেদের এই নরকে পাঠানোর কি দরকার ছিল?’ আরেকজনের প্রশ্ন।
কর্পোরাল ড্যানিল নোভোলোডস্কিও (২৪) এর জন্য একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও অনুষ্ঠিত হয়েছিল যিনি একটি এয়ার অ্যাসল্ট আর্টিলারি ব্যাটারির একজন সিনিয়র বন্দুকধারী ছিলেন।