নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমাদের কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সব ধর্মের মর্যাদা দেয়। কোরআন শরিফে আছে, ‘লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়াদিন’ অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। যার যার মতামত সে সে প্রকাশ করবেন।”
শনিবার (৩ জুলাই) একাদশ জাতীয় সংসদের ১৩তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এর আগে সংসদের এই অধিবেশনেই বিএনপির হারুনুর রশিদ কোরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা নেই বলে দাবি করেছিলেন। কোরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ নেই কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকায় সমালোচনা করেন তিনি। হারুন বলেন, ‘সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা রাখা সাংঘর্ষিক।’
বিএনপি নেতা হারুনের বক্তব্যের প্রসঙ্গটি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য বলেছেন, কোরআনে না-কি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা নেই। আমি বলব অবশ্যই আছে। ‘আমাদের নবী করীম (সা.) বলেছেন অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে। তিনি এই শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সব ধর্মের মর্যাদা দেয়। কুরআন শরীফে আছে, লাকুম দিনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। যার যার মতামত সে প্রকাশ করবে। এটা প্রকৃতপক্ষে ধর্ম নিরপেক্ষতাই আসে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পবিত্র কোরআনে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা রয়েছে। আমাদের নবী করিম (সা.) বলেছেন, অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে। তিনি এই শিক্ষা দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার যার মতামত সে সে প্রকাশ করবেন। এটা প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতাই আসে। যতই তিনি (এমপি হারুনুর রশিদ) অস্বীকার করুন, যেভাবে তিনি ব্যাখ্যা দেন। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যুগ যুগ ধরে এটা চলছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই নিজের ধর্ম পালনে সব সময় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল থাকতে হবে। এটা আমাদের শিক্ষা। এটা নবী করিম (সা.) সব সময় বলে গেছেন। কাজেই এ ধরনের কথা সংসদে না বলাটাই ভালো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল, যে দল সৃষ্টি করেছেন একজন সামরিক জান্তা। তিনি সেনাপ্রধান কখন হয়েছেন? ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার যে পরিকল্পনা হয়, তার মূল শক্তি ছিল এই জিয়াউর রহমান।’
তিনি বলেন, ‘খুনি কর্নেল রশিদ ও ফারুকের বিবিসিকে দেওয়া ইন্টারভিউতে এটি স্পষ্ট রয়েছে। জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে না থাকলে কোনো দিনও এ ষড়যন্ত্র করতে পারত না। কারণ জিয়াউর রহমান ছিলেন উপ-সেনাপ্রধান।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আবার রাজনীতিবিদ হন। উর্দি পড়ে ক্ষমতায় এসে রাজনীতিতে নাম লেখান। সেখান থেকে পরে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। সেই দলই হলো বিএনপি।’
দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারব্যবস্থায় যত উন্নয়ন হয়েছে, তার সবটাই হয়েছে আওয়ামী লীগের সময়। বিএনপির আমলে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়েও বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের সময় এক ছাত্রদল নেতার ঘাড়ে হাত রেখে আলোচনা করে বিচারপতির রায় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভোট চুরির সুযোগ তৈরির জন্য প্রধান বিচারপতির মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার বিষয়টিও করেছিল বিএনপি।’