প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪১তম ব্যাচ ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ পাসিং আউট প্যারেড’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা জয়ের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট-১৯৭৪ প্রণয়ণ করেন।
এর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন হিসেবে ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি প্রণয়ন করেন। তার শাসনামলে ১৯৭৩ সালে দেশে সর্বপ্রথম মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মানে রূপ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে। অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি নটিক্যাল ও মেরিটাইম ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগও করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে মেরিন ফিশারিজ একাডমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত হয়েছে।
মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪১তম ব্যাচের ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রতিষ্ঠান সগৌরবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ৭৫ এর পর এ প্রতিষ্ঠানে নজর দেওয়া হয়নি। জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে দিয়েছি। এখানে নারীরাও ভর্তি হচ্ছে। ক্যাডেটরা যাতে বিদেশি সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পায় সে লক্ষ্যে কোর্স চালু করা হয়েছে। চার বছরের ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। উচ্চতর ডিগ্রি লাভের সুযোগ রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে বিপুল সামুদ্রিক সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গোপসাগর শুধু আমাদের জন্য না, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিশাল সম্পদও রয়েছে। সেই সম্পদ আহরণ করতে হবে। এখানে যেমন মৎস্য সম্পদ রয়েছে, তাছাড়া অন্যান্য সম্পদও আছে।
সেগুলো আহরণ করে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারবো, এটাই আমি আশা করি। ’এসময় তিনি স্বাধীনতা নীতি এবং আদর্শ এই নব্য নাবিকদের মেনে চলার নির্দেশনা দেন। সেই সঙ্গে সাহসের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
‘ব্লু অর্থনীতি’ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্লু ইকোনমি ব্যবহার করে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল, শক্তিশালী ও মজবুত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছি, এসডিজিও সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। করোনার কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেলেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। ’
তিনি আরো বলেন, ‘সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহার করে এসডিজি-১৪ এর লক্ষ্যমাত্র অর্জনে পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছি। আমি আশা করি, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তোমাদের (মেরিন ফিশারিজ একাডেমি’র ক্যাডেট) ভূমিকা থাকবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ’
এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। উল্লেখ্য, এই একাডেমি থেকে পাস হওয়া ৫৮ জন মহিলা ক্যাডেটসহ ১ হাজার ৯১৪ জন ক্যাডেট দক্ষতার সঙ্গে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মেরিটাইম সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন।