প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:
১৬ বছর বয়সী ইলিয়া তার দুই বন্ধুর সাথে মারিউপোলের ফুটবল খেলছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সব শেষ! বিশ্বজুড়ে মর্মস্পর্শী ছবিতে ইলিয়ার বাবা সের্হিই রক্তমাখা চাদরে জড়ানো তার ছেলের মৃতদেহের পাশে কাঁদছিলেন। ইলিয়া বিস্ফোরকের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
গোলা এবং গুলিবিদ্ধ হাসপাতালে তিনি তার স্বর্ণকেশী ছেলেকে বুকে নিয়ে, ‘আমার ছোট ছেলে’ বলে কাঁদছিলেন। এটি ইউক্রেনের রক্তাক্ত যুদ্ধক্ষেত্রের হতবাক করা চিত্রগুলির মধ্যে একটি যেখানে ভøাদিমির পুতিনের বর্বর আক্রমণে শত শত নিরীহ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ গত বুধবার ইলিয়া আজভ সাগর শহরে তাদের স্কুলের কাছে একটি ফুটবল মাঠে খেলার সময় আঘাত পান। তার দুই বন্ধু আভিড এবং আর্টিওম জীবনে বেঁচে গেলেও অঙ্গচ্ছেদের সম্ভাবনার মুখোমুখি।
তিনজনকে গাড়িতে করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পৌঁছানোর পর ইলিয়াকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই হৃদয় বিদারক ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা ইলিয়ার বাবার দিকে তাকাতে পারছিলেন না।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোগ্রাফার ইভজেনি মালোলেটকা, যিনি দুঃখজনক ছবিটি তুলেছিলেন, তিনি বলেছেন: ‘গাড়িটি হাসপাতালে নিয়ে গেছে। একজনের পা গুলিবিদ্ধ ছিল, দেখতে কাঁচা মাংসের মতো। ইলিয়া ইতিমধ্যে মৃত।’
তিনি আরও বলেন: ‘আর্টিয়াম এবং ডেভিডের পা বুলেটে ছেঁড়া ছিল। এই আঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পা কেটে ফেলা হয়। আমি নিশ্চিত নই তাদের কি হতে যাচ্ছে।
”তাদের যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেটিতে এবং আশেপাশের বাড়িগুলোতে গোলাবর্ষণ করা হয়। ওই হাসপাতালের লোকজনকে প্রায়ই মেঝেতে শুইয়ে দিতে হতো।’
উল্লেখ্য, আজভ সাগরে বন্দর এবং অবস্থানের কারণে মারিউপোল শহরটি একটি প্রধান রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তু। যুদ্ধে শতাধিক লোক মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একজন স্থানীয় কর্মকর্তা রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে শহরটিকে পৃথিবীর মুখ থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন বলে অভিযুক্ত করেছেন।
মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কো আজ তার শহরে হামলাকে ‘ইউক্রেনীয় জনগণের পূর্ণাঙ্গ গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। বিদ্যুতের লাইন ছাড়া, আহতদের দেখাশোনা করা চিকিৎসকরা তাদের কোথায় নিয়ে যাবেন তা তাদের জানা ছিল না।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে ‘পারমাণবিক সন্ত্রাস’ অবলম্বন করার এবং ‘চেরনোবিলের চেয়ে ছয় গুণ খারাপ’ বিপর্যয়ের ঝুঁকি নেয়ার অভিযোগ করেছেন যা পুরো মহাদেশকে প্রভাবিত করবে।