প্রভাতি সংবাদ:
শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্য নিয়ে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে দুই দিনের বিশ্ব শান্তি সম্মেলন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর তিনটি ভেন্যুতে এ সম্মেলন হবে। এতে সরাসরি ও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে যোগ দেবেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অন্তত ৯০ জন অতিথি।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ- এমন অভিপ্রায় সামনে রেখে বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘শান্তি ও সম্প্রীতির দেশে স্বাগতম’। বাংলাদেশ যে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, এই সম্মেলনে সেই বার্তা সবার কাছে পৌঁছাতে চায় ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সম্মেলনে শান্তি রক্ষায় কাজ করা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কবি, সাহিত্যিক, নোবেল বিজয়ী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, শিল্পী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক, মানবাধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা অংশ নেবেন।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনের অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগামী ৪ ও ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘বিশ্ব শান্তি সম্মেলন’ আয়োজন করেছে। ৪ ডিসেম্বর উদ্বোধনী ও ৫ ডিসেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানে যথাক্রমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতি সম্মেলনের গুরুত্বকে বহুগুণে বাড়াবেন।
তিনি বলেন, ৯১টি দেশের শান্তিকর্মীরা আমাদের শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এখানে তারা বিশ্ব শান্তি বিষয়ে একটি ঘোষণা তৈরি করবেন।
বঙ্গবন্ধুর শান্তি দর্শনের আলোকে শান্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোচনা হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণা’ শীর্ষক একটি সর্বসম্মত ঘোষণার মাধ্যমে সম্মেলন শেষ হবে।
উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে খ্যাতিমান কয়েকজন অতিথি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হবেন বলে জানান মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, সোনারগাঁও হোটেল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে হবে শান্তি সম্মেলনের বিভিন্ন আয়োজন।
এর মধ্যে উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠান হবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। প্যানেল আলোচনা হবে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকবেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান-কি মুন, মিশরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লীগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসা, পূর্ব-তিমুরের সাবেক প্রেসিডেন্ট নোবেলবিজয়ী হোসে রামোস হোর্তা ও মালয়েশিয়ার সাবেকমন্ত্রী সৈয়দ হামিদ আলবার।
অপরদিকে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টং ও ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা যুক্ত হবেন সমাপনী অনুষ্ঠানে।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আজ (শনিবার) বেলা আড়াইটায় দুদিনব্যাপী এই সম্মেলন উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ‘অ্যাডভান্সিং পিস থ্রু সোশ্যাল ইনক্লুশন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। আগামীকাল রবিবার সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, সোনারগাঁও হোটেল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে হবে শান্তি সম্মেলনের বিভিন্ন আয়োজন। উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠান হবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। প্যানেল আলোচনা হবে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবারের সম্মেলন সশরীরে ও ভার্চুয়াল- দুই মাধ্যমের অধিবেশনই থাকছে। সম্মেলনে ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণা’ গৃহীত হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর নামে সম্মাননা দেয়া হবে। বৈশ্বিকভাবে যেসব মানুষ শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখছেন, বিশেষ করে কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিক, বিজ্ঞানীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্মেলনে সম্মানিত করা হবে।
ঢাকায় বিশ্ব শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে ‘সিনেমা ফর পিস’ নামের দুই দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবের। জাতীয় জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আজ ও আগামীকাল রোববার এই উৎসবে চারটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সেগুলো হলো- ব্যালাড অফ আ সোলজার, দ্য ক্রেনস আর ফ্লাইং, ওয়ার অ্যান্ড পিস ও অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী। এ জন্য কোনো টিকিট লাগবে না।
সম্মেলনে আমন্ত্রিত শতাধিক অতিথির জন্য চারটি প্যানেল ডিসকাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সম্মেলনের শুরুর দিন আজ দুটি এবং সমাপনী দিন আগামীকাল দুটি প্যানেল ডিসকাশন হবে। এসব প্যানেল ডিসকাশনে যোগ দিয়ে অতিথিরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।