স্কুলের সভাপতির সই ছাড়া কোন বেতন ভাতা উত্তোলনসহ কোন আর্থিক লেনদেন করার সুযোগ নেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেই দিনের পর দিন অনিয়ম করে চলেছেন।
এস এ সিয়াম, চৌগাছা(যশোর):
যশোরের চৌগাছার গরিবপুর আদর্শ বিদ্যাপীঠ এর প্রধান শিক্ষক নূর ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
গত সোমবার (১২ জুলাই) বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন উপজেলা নির্বাহী অফিাসার বরাবর এ অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) এর সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন আমাকে (ডিও,র মাধ্যমে) উপজেলার গরীবপুর আদর্শ বিদ্যা পীঠ এর সভাপতি মনোনিত করেন।\
পরবর্তীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য যশোর মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন।
বিদ্যালয়রে প্রধান শিক্ষকের ২১-০১-২১ ইং তারিখ আবেদনের প্রেক্ষিতে (আইডি-৪৬১৬) সকল বৈধ কার্যক্রম শেষে ১৩-০৪-২১ তারিখ আমাকে (আব্দুল্লাহ আল মামুন) সভাপতি করে শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ডা. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত একটি এডহক কমিটি অনুমোদন করেন।
কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুমোদিত কমিটির সভাপতিকে না জানিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতার টাকা উত্তোলন করে চলেছেন।
তিনি আরো বলেন, কমিটি অনুমোদনের পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যালয়রে প্রধান শিক্ষক নতুন অনুমোদিত কমিটির একটিও সভা করেননি। শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা উত্তোলনের জন্য আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেননি। লিখিত আবেদনে বৈধ সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিভাবে বেতন ভাতা উেত্তোলন করছেন বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেছেন।
অভিযোগকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন উপজেলার পিতম্বরপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। তিনি ‘দৈনিক কল্যান’ পত্রিকার চৌগাছা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্কুলের প্রধানশিক্ষক আপাদমস্তক একজন দূর্নীতিবাজ। মানুষ গড়ার কারিগর, একজন স্কুলের শিক্ষক কোনভাবেই এমন স্বেচ্ছাচেরিতা করতে পারেন না বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, স্কুলের সভাপতির সই ছাড়া কোন বেতন ভাতা উত্তোলনসহ কোন আর্থিক লেনদেন করার সুযোগ নেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেই দিনের পর দিন অনিয়ম করে চলেছেন।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে সঠিক বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এবিষয়ে গরীবপুর আদর্শ বিদ্যা পীঠ এর প্রধান শিক্ষক নুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এডহক কমিটির অনুমোদনের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
তিনি প্রভাতী সংবাদকে বলেন, করোনা কালিন সময়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকার কারনে কবে কমিটি অনুমোদন হয়েছে তা আমি বুঝতে পারিনি। ১৩ এপ্রিল অনুমোদনের চিঠি কবে পেয়েছেন প্রশ্নে সদুত্তোর দিতে না পারেননি।
বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে কমিটি অনুমোদনের চিঠি পেতে দেরি হওয়ার কারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে সাথে কথা বলে বেতন ভাতা উত্তোলন করেছি।
এ বিষয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায় যে,যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে একটি করে মোবাইল সিম কার্ড দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের যে কোনো বার্তা মুঠো ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হয়। এবং প্রথ্যেক বিদ্যালয়ের একটি ওয়েব সাইড ও ই-মেইল ঠিকানা আছে সেখানেও জানানোর পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হয়।
এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের পরিচালনা কমিটির সাবেক কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা হয়।
প্রধান শিক্ষক এর আগেও নানা স্বেচ্ছাচারিতা করেছে বলে তারা জানান। স্থানীয় ক্ষমতাধরদের সাথে তিনি ম্যানেজ করে চলার কারণে এর আগে তার বিরুদ্ধে কেও অভিযোগ করেনি।
তারা বলেন, এর আগেও তিনি কমিটির সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে চলেননি। নিজের খেয়ালখুশি মতো সিদ্ধান্ত নিতেন। ঠিকমত পরিচালনা পর্ষদের মিটিং ডাকতেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলি এনামুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে