মিজানুর রহমান:
লালমনিরহাট থেকে পার্বতীপুর গামী কমিউটার ট্রেনের গন্তব্য পরিবর্তন করে বুড়িমারী অভিমুখে যাত্রা করার সিদ্ধান্তে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। রেলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য দাবী জানিয়েছে যাত্রীরা।
লালমনিরহাট রেলবিভাগের কমিউটার ট্রেনটি ভোর বেলা পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে এসে লালমনিরহাট ষ্টেশনে সকাল ৮টায় পৌছাতো, দশ মিনিট বিরতি দিয়ে ট্রেনটি পুনরায় বুড়িমারির উদ্দেশ্যে ছুটে যেত, বুড়িমারিতে বিশ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে পুনরায় লালমনিরহাট হয়ে রংপুর পার্বতীপুর যেত। এভাবে প্রতিদিন কমিউটার ট্রেনটি বুড়িমারি লালমনিরহাট পার্বতীপুর যাতায়াত করত।
লালমনিরহাট রেল বিভাগের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিউটার ট্রেনটি সকাল ৮টা বাজে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে বুড়িমারী যাবে, বিশ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় লালমনিরহাট ফিরে আসলেও পার্বতীপুর মুখী না গিয়ে এখানেই যাত্রা সমাপ্ত করবে। ১লা মার্চ থেকে নতুন এই সিদ্ধান্তটা কার্যকর হবে বিষয়টি লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ সুফী নুর নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট কমিউটার ট্রেনটি সকালে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে এসে রংপুর হয়ে লালমনিরহাট সকাল ৮ টায় এসে পৌছাতো। লালমনিরহাট থেকে চাকুরীজিবী বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি ও ভারত গামী পার্সপোর্ট যাত্রী নিয়ে বুড়িমারির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতো। সকাল দশটা নাগাদ বুড়িমারি পৌছে বিশ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় ট্রেনটি লালমনিরহাট, রংপুর, পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতো। পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার মানুষ জেলা সদর আসতো, লালমনিরহাট থেকে রংপুর বিভাগের সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিতে এবং হাজী দীনেশ বিশ্ব বিদ্যালয় দিনাজপুর যেতে ছাত্র ছাত্রী সহ ব্যাবসায়ীদের অত্যন্ত সাশ্রয়ী যাতায়াতের মাধ্যম ছিল এই কমিউটার ট্রেনটি। যাত্রীবহুল হওয়ায় রেল বিভাগের লাভজনক ট্রেন ছিল এটি। এই ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় পাঁচটি উপজেলা ও দুটি জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
নতুন সিদ্ধান্তে ট্রেনটি সকাল ৮টায় কুড়িগ্রাম জেলার রমনা বাজার থেকে রওয়ানা দিয়ে রংপুর পৌছার পর বেলা ১১ টায় লালমনিরহাট এসে পৌছাবে। রাত দশটায় লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে কাউনিয়া হয়ে রমনা বাজার ষ্টেশনে রাত দেড়টা নাগাদ পৌছাবে। রাতে যখন ট্রেনটি রমনা বাজার যাবে লালমনিরহাট থেকে কুড়িগ্রাম মুখী যাত্রী পাওয়া যাবেনা। ফলে ট্রেনটি চালালে রেলের প্রচুর লোকসান গুনতে হবে। অন্যদিকে পার্বতীপুর অভিমুখে ট্রেনটি বন্ধ হবার কারনে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট রেল বিভাগের বিভাগীয় ম্যানেজার উজগ শাহ মোহাম্মদ সুফি নুর বলেন কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ নয় শুধু মাত্র যাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, সেই সাথে কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল রমনা বাজার ট্রেনটি পুনরায় চালু করবার জন্য, কোভিড কালীন সময় থেকে যেটি বন্ধ ছিল।