নিজস্ব প্রতিবেদক;
যশোর সদর হাসপাতালে জন্ম নেওয়া একটি শিশুর জন্মের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা গেছে।
শিশুটির এরকম মৃত্যুকে অস্বাভাবিক এবং তাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তার বাবা-মা একে অপরের দায়ী করছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ বলছেন, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু।
কোতয়ালী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য শিশুটির মরদেহ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শিশুটির বাবা নাসির উদ্দিন রাব্বি চৌগাছা উপজেলার বড়খানপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে। মা যশোর শহরের ষষ্টিতলাপাড়া এলাকার উম্মে সালমা মলি।
নাসির উদ্দিন রাব্বি জানান, রোববার রাতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে তারর স্ত্রী স্বাভাবিকভাবে মেয়েশিশু প্রসব করে। পরদিন বেলা ১২টার দিকে স্ত্রী তাকে কোনো কিছু না বলে মেয়েকে নিয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতাল থেকে চলে যায়।
“বেলা ২টার দিকে আমাকে ফোনে বলে- আমি কারবালা এলাকায় মেয়েকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, মেয়েকে নিয়ে যাও। বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ মোবাইলফোনে জানায়- তোমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে; লাশ এখন হাসপাতাল মর্গে আছে এবং আমাকে সেখানে বলে।”
তিনি দাবি করেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। রাব্বি বলেন, মলি যশোর মহিলা কলেজে এবং আমি যশোর এমএম কলেজে পড়ি; সম্পর্ক করে আমাদের বিয়ে। বিয়ের ১১ মাস পার হলেও সুখ কী জিনিস পাইনি।
খালাতো ভাইয়ের সাথে তার (মলি) পরকীয়া সম্পর্ক। সেকারণে সে বাবার বাড়ি ষষ্টিতলায় থাকত। বহু চেষ্টা করেও মলিকে চৌগাছায় নিয়ে রাখতে পারতাম না। এই নিয়ে থানা পুলিশ, স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠকও হয়েছে।
সালিশের সিদ্ধান্ত ছিল, পেটে বাচ্চা- ভূমিষ্ট হওয়ার পরে আমাদের ছাড়াছাড়ি হবে। মলি তার সুখের জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে উম্মে সালমা মলি বলেন, সন্তান গর্ভে আসার পর অবহেলা করা হয় আমাকে। মেয়ের জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাস কষ্ট হচ্ছিল; হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। সিদ্ধান্ত আগেই ছিল, তার সাথে আর থাকব না। তার অভিযোগ, রাব্বির তিনজন বান্ধবী আছে। এছাড়া আরও দুই নারীর সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক।
চৌগাছা উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, সালিশ বিচারে সিদ্ধান্ত ছিল, মলির গর্ভের শিশুটি জন্ম নেওয়ার পরে স্বামী-স্ত্রীর আলাদা হয়ে যাবে। শিশুটি জন্ম নেয়ার অল্প সময়ের মধ্যে তড়িঘড়ি হাসপাতাল ত্যাগ, যাওয়ার সময় শিশুটি সুস্থ ছিল আর অল্পসময়ের মধ্যে তার মৃত্যু- এটি খুবই রহস্যজনক।
কোতয়ালী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।