মেহেরপুর প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান লকডাউনে মেহেরপুরে বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। বিয়ের পরদিন দুপুরেই ওই শিশু নববধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে।
স্থানীয়রা জানায়, নবম শ্রেনীর ছাত্রী মিতার খাতুনের রবিবার রাতে প্রতিবেশি প্রবাসফেরত রফিকুল ইসলামের সাথে গোপনে বিয়ে হয়। রাতেই স্বামীর বাড়িতে চলে আসে মিতা।পরদিন সোমবার দুপুরে স্বামীর ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
প্রাথমিক সুরতহাল তদন্তে আসা গাংনী থানার উপপরিদর্শক এসআই বখতিয়ার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ঘরের ফ্যানের সিলিং এর সাথে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা তা তদন্ত করে জানা যাবে।
গ্রামবাসী জানায়, গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৩৬) একই এলাকার ইন্নাল আলীর নাতনি মিতা (১৩) সাথে পারিবারিকভাবে রবিবার রাতে বিয়ে হয়।
সোমবার দুপুর তিনটার দিকে নববধু মিতার ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় শশুড় বাড়ির লোকজন তাকে ডাকা ডাকি করে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়না। পরে দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে ঢুকলে ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় মিতাকে দেখতে পায়। পুলিশে খবর দিলে বিকেলে পুলিশ এসে মিতার লাশ উদ্ধার করে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশি জানান, সৌদিআরব প্রবাসী রফিকুল ইসলাম প্রথমে ভারতীয় একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল। পরে মামলা মকদ্দমায় সেই বিয়ে নিষ্পত্তি হয়। বছর দুয়েক আগেও আরো দুটি বিয়ে করে রফিকুল।
বিয়ের সপ্তাহ না পার হতে তারাও চলে যায়। মিতা তার চতুর্থ বিয়ে। নতুন বৌ চলে না গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাছাড়া রফিকুলের বয়স ৪০ বছর আর মিতার বয়স চৌদ্দ পনের হবে।
নিহত শিশু নববধু মিতার নানী মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, আমার স্বামী কোন মতে মাঠে খেটে সংসার চালায়। আর মিতার বয়স যখন দশ মাস তখন ওর বাপ আমার মেয়ে মিতার মাকে তালাক দি ছাইড়ি চইলি যায় আর কোন খোঁজ খবর নেয়নি।
আমি কোলে পিটে কইরি মানুষ কইরিছি। অভাবের সংসার আমার তাই বিদেশি ছেইলির সাথে বিয়ে দিনু শুখে থাকবে বইলি আজ আমার নাতনি আমাদের ছাইড়ি চইলি গেলো।’
রফিকুলের বোন সিমা খাতুন বলেন, ‘আমি আর মিতা এক সাথে বসে ঘরে টিভি দেখছিল। হঠাৎ সে আমাকে বলল আপু আমি একটু উপর থেকে আসছি। যখন দুই ঘন্টা পার হয়ে গেলে আমি ডাকতে এসে ঘর বন্ধ পাই।
এসময় মিতা মিতা বলে ডাকাডাকি শুরু করেও কোন সাড়াশব্দ পাইনা। পরে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ফ্যানের সাথে ওড়না লাগান অবস্থায় ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দিই।’
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, বিকেলে মিতার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। গাংনী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কলহের জের ধরে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
যশোরে পারিবারিক কলহেরজের ধরে ফারহানা আক্তার বন্যা (২৮) নামের এক গৃহবধূ’কে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ইমরান শেখের বিরুদ্ধে। দুই সন্তানের জননী ফারহানা আক্তার বন্য ‘কে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী নিহতের বোন আবেদা আক্তার বাধনের।
সোমবার (৫ জুলাই) ভোরে শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়ার ইবাদ খানের মেয়ে ফারহানা আক্তার বন্যা।
নিহতের বোন আবেদা আক্তার বাধন বলেন, আমার বোনের সঙ্গে ইমরানের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। গতরাতে বন্যা স্বামীর কাছে তার গহনা ফেরত চাইলে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে বোন জামাই।
নিহতের ছেলে উৎস (১০) জানায়, গতরাতে মায়ের গহনাগুলি দেয়ার জন্য বাবাকে বলেন। বাবা দিতে চাননি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাতে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে দেখি মায়ের মরদেহ পড়ে আছে। মুখের ওপর বালিশ দেয়া। মায়ের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। আমি আর ছোট বোন উনাইজা ঘরের ভেতর কিন্তু বাইরে থেকে দরজা আটকানো। আমি চিৎকার দিলে পরিবারের লোকজন দরজা খুলে আমাকে ও বোনকে বের করেন।
যশোর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাইজুল ইসলাম বলেন, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা এখনও বলা যাচ্ছেনা। বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট আসলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন: যশোরের ভৈরব চত্বর: ময়লার ভাগাড়ে স্থলে পুষ্পের সারি
মোটরসাইকেল চুরি তবুও থেমে নেই ছাত্রলীগের অক্সিজেন সেবা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে মুখে কুলুপ কেন বাবুনগরী’র?