নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়াল । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মৃতের সংখ্যায় ৫ লাখ ছাড়াল দেশটি।
করোনাকে ‘সাধারণ ফ্লু’ বলে তাচ্ছিল্য করে তা মোকাবিলায় গুরুত্ব দিতে চাননি দেশটির প্রেসিডেন্ট। করোনার নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে দেশটিতে টিকা কর্মসূচি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সরকারের করোনা মোকাবিলার তদন্ত শুরু করেছে কংগ্রেস।
ব্রাজিলে এখনো প্রতিদিনই ৭০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১১ শতাংশ ব্রাজিলিয়ান এখন পর্যন্ত টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন। আর এক ডোজ নেওয়া মানুষের সংখ্যা ২৯ শতাংশ।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিশেষজ্ঞ ইস্টার সাবিনো বলছেন, ‘মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকার যেহেতু দেশে সামাজিক দূরত্ব এবং মাস্ক পরার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাই মহামারি মোকাবিলার জন্য একমাত্র উপায় এখন মানুষকে টিকা দেওয়া।
ব্রাজিলের গণমাধ্যমগুলো বলছে, স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির ২০টি অঙ্গরাজ্যের অন্তত ৪৪টি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে এ সময় ছিল প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর পদত্যাগ দাবিতে নানা প্ল্যাকার্ড। ঢোল বাজিয়ে চিৎকার করে তার স্লোগান দিচ্ছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেখানে করোনা টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরও মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে, সেখানে এই পরামর্শের ঘোরবিরোধী অবস্থান বোলসোনারোর। এ জন্য তাকে একবার জরিমানাও গুণতে হয়েছিল।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বোলসোনারো বলেন, ‘যারা বলে টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক পরতে হবে, তারা বিজ্ঞানে বিশ্বাস করে না। করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করেছেন— এমন ব্যক্তিদের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানো একেবারেই অসম্ভব।’
এদিকে সরকারের মহামারি মোকাবিলা ও দেশের টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে ব্যর্থতার অভিযোগে ব্রাজিলের সিনেট তদন্ত শুরু করায় চাপের মুখে পড়েছেন বোলসোনারো। দেশজুড়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ তার ওপর এই চাপ আরও বাড়াবে।