প্রভাতি সংবাদ:
বাঁচা-মরার ম্যাচ, জিতলে নিশ্চিত হবে প্লে-অফ। হারলে বিদায় বলতে হবে এবারের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে। প্রতিপক্ষ সহজ নয় একেবারেই। আগের দিনই যাদের বিপক্ষে ৬৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে এই সমীকরণে মুখে পড়ে খুলনা টাইগার্স, শনিবার ছিল প্রতিপক্ষ সেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া টাইগাররা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বেশ শক্তভাবে। কুমিল্লাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে প্লে-অফের টিকিট পেয়েছে খুলনা।
আগে ব্যাট করে ফাফ ডু প্লেসির সেঞ্চুরির কল্যাণে স্কোর বোর্ডে ১৮২ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। সেঞ্চুরির জবাব সেঞ্চুরি দিয়েই দিল খুলনা। চট্টগ্রামে যেমনটি হয়েছিল সিলেট-ঢাকার ম্যাচে। লেন্ডন সিমন্সের সেঞ্চুরি ম্লান হয়েছিল তামিম ইকবালের শতকে। আজ ডু প্লেসি ম্লান আন্দ্রে ফ্লেচারে। এই ক্যারিয়ীয় ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির সঙ্গে শেখ মেহেদী হাসানের ৪৯ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো ফিফটিতে ৯ উইকেটে জয় পেয়েছে খুলনা।
এই জয়ের ফলে এলিমিনেটরের টিকিট পেয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। খুলনার জয় আর কুমিল্লার হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজার দল মিনিস্টার ঢাকার। খুলনা হারলেই কেবল প্লে-অফে যেতে পারতো ঢাকা।
জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৮৩ রান। মিরপুরে এই লক্ষ্য টপকানো সহজ নয় মোটেও। তবে শুরু থেকে যেভাবে ব্যাট করলো খুলনার দুই ওপেনারা ফ্লেচার-মেহেদী, তাতে পুরোটা সময়ই দাপট ধরে রাখে খুলনা। কুমিল্লা যেখানে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তোলে ৪৮ রান, সেখানে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খুলনা তোলে ৬৯ রান। ম্যাচে বাকি সময়ও কুমিল্লার বোলারদের উপর তান্ডব চালান দুজন। যেখানে মাত্র ২৫ বলেই অর্ধশতকের স্বাদ পান ফ্লেচার। পরে সে ফিফটিকে শতকে রূপ দেন।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মাত্র সমান ৬টি করে চার-ছয়ের মারে ৫৯ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ফ্লেচার। শেষ পর্যÍ অপরাজিত থাকেন ৬২ বলে ১০১ রানে। কম যাননি শেখ মেহেদীও। ৩১ বলে ফিফটি করেন তিনি। যদিও দলের জয় ১ রান বাকি থাকতে আউট হন এই তরুণ। ৪৯ বলে ৭৪ রানের ইনিংসটি সাজান ৬টি চার ও ৪টি ছয় দিয়ে। এতে ৯ উইকেটে জয় পায় খুলনা। এ ম্যাচ জয়ের ফল এলিমিনেটরে খুলনা। ১৪ ফেব্রুয়ারি সে ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা কুমিল্লার ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি। এবারের বিপিএলে প্রথমবার একাদশে সুযোগ পাওয়া পারভেজ হোসেন ইমন সুবিধা করতে পারেননি। শেখ মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড হন সমান ৭ বলে ৭ রানে। ৭ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়ক মুমিনুল হক। দলীয় ৩১ রানের মধ্যেই কুমিল্লা হারিয়ে ফেলে এই দুই ব্যাটসম্যানকে।
চার নম্বরে ক্রিজে নামেন দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া ফাফ ডু প্লেসি। তৃতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়ের সাথে গড়েন ৪৯ রানের পার্টনারশিপ। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউট হয়ে ২৭ বল খেলে ৩১ রান করে জয় বিদায় নেওয়ার পর মঈন আলি ৮ রানে সাজঘরে ফেরেন। পরে দলের ভার একাই বয়ে যান ফাফ। খুলনার বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৫২ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি।
ইনিংসের ১৯তম ওভারে যখন সাজঘরের পথ ধরেন ফাফ, তখন নামের পাশে ঝলমল করছে ১০১ রান। মাত্র ৫৪ বলে সাজান নিজের এই ইনিংসটি। যেখানে ১২টি চারের সঙ্গে ছক্কা মারেন ৩টি। এটি বিপিএলে তার প্রথম এবং এবারের আসরের তৃতীয় শতক। ফাফের দুর্দান্ত এই ইনিংসের সঙ্গে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ১১ বলে ২০ রানের অপরাজিত ইনিংসের সাহায্যে ৫ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা জড়ো করে ১৮২ রান।