তারেক সুজন, বেনাপোল থেকে:
বাজেট ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি পণ্য খালাস কমে গিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ নির্মাণসামগ্রীর অর্ডার বাতিল করেছেন মিল মালিকেরা।
শুল্কায়নের জন্য কাস্টমস হাউসে এসাইকোডো ওয়ার্ল্ডে বিল অফ এন্ট্রি কমে গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কোনো পণ্যের শুল্কহার কমবে, নাকি বাড়বে- তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আমদানিকারকেরা শুল্কায়নের জন্য পেপার এন্ট্রি করছেন না।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশের বেশির ভাগ শিল্প ও পোশাক কারখানার ৮০ শতাংশ কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি হয়ে থাকে। এ বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে আছে, শিল্পকারখানায় ব্যবহারের কাঁচামাল, তৈরি পোশাকের কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, রাসায়নিক দ্রব্য, কারখানার যন্ত্রাংশ, টায়ার, মোটরগাড়ি, বাস ও ট্রাকের চেসিস, ফল, পেঁয়াজ, মাছ, চাল, সুতা ও শিশুখাদ্য।
বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর বাজেটের আগে বেশি শুল্ককর আরোপযোগ্য পণ্য আমদানি কমে যায়। এবারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া যেসব পণ্য আমদানি হয়ে বন্দরে রয়েছে সেগুলো খালাসের জন্য শুল্কায়ন কার্যক্রম চলছে না। এ জন্য বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে যেখানে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে প্রতিদিন ৪০০-এর বেশি পণ্য শুল্কায়নের জন্য এন্ট্রি হতো, সেখানে গত দুই দিনে ৬৮১টি পণ্য এন্ট্রি হয়েছে। যেসব পণ্য এন্ট্রি হচ্ছে না সেগুলো বাজেটের পরে এন্ট্রি হবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজীজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেনাপোল বন্দর দিয়ে বেশি শুল্ককর আরোপযোগ্য পণ্য আমদানি কমে গেছে। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘কোনো পণ্যের শুল্কহার কমবে, নাকি বাড়বে, সেই জটিলতায় আমদানিকারকেরা পণ্য আমদানি করলেও বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে তা খালাসের প্রক্রিয়া শেষ করছেন না।’
এদিকে বেনাপোল বাজারের রড-সিমেন্টের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দোকানে ক্রেতা আছে, কিন্তু পণ্য নেই।
বেনাপোল বাজারের রড-সিমেন্ট বিক্রেতা মিজানুর রহমানের জানান, কারখানার মালিকেরা রড, সিমেন্টের অর্ডার নিয়ে মাল দিচ্ছেন না। মিলের মালিকেরা বলছেন, বাজেটে দাম কমবে কি না, সেদিকে তারা খেয়াল রাখছেন। বাজারের অন্যান্য দোকানেও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট দেখা গেছে।