নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে কুয়াকাটা যেতে আগে অর্ধ ডজন সেতু পার হতে হতো শুধুমাত্র বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতেই। গত দুই দশকে সব সেতু করা হলেও নানা জটিলতায় শেষ হচ্ছিল না এক হাজার ৪৭০ মিটার (প্রায় দেড় কিলোমিটার) দীর্ঘ পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতুর কাজ।
বর্তমানে সেতুর নির্মাণকাজ শেষের দিকে, সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাইয়ে সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
ওপেক এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো নির্মিত হচ্ছে ‘এক্সট্রা ডোজ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার’ টাইপের এ সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এদিকে সেতুটি খুলে দেওয়া হলে ফেরি পারাপারের দুর্ভোগ ঘুচবে। আর এ সেতুর বদৌলতে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার দ্বারও খুলে যাবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সেতুটি চালু হলে কক্সবাজারের চেয়েও কাছের দূরত্বে চলে আসবে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র সাত ঘণ্টা।
জানা যায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জুলাই মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আশ্বাসের কথা শুনিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর।
সেতুর প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, কর্ণফুলী দ্বিতীয় সেতুর আদলেই নির্মাণ করা হয়েছে ফোর লেন লেবুখালী সেতু। পায়রা নদীর মূল অংশের ৬৩০ মিটার ‘বক্স গার্ডার’ চারটি স্প্যানের ওপর নির্মিত হয়েছে।
এছাড়া পায়রা নদীতে জোয়ারের সময় নদী থেকে সেতু ১৮.৩০ মিটার উঁচু থাকবে। এতে নদীতে বড় বড় জাহাজ চলাচলে কোনও সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ‘খরস্রোতা পায়রা নদীর ভাঙন থেকে লেবুখালী সেতু রক্ষায় পটুয়াখালী প্রান্তে এক হাজার ৪৭৫ মিটার নদী শাসন কাজ চলছে। সেতুর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বরিশাল প্রান্তেও নদী শাসনের প্রয়োজন। সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে লেবুখালী সেতু।’
এদিকে সেতুর টোল আদায়ের জন্য পটুয়াখালী প্রান্তে নির্মিত হচ্ছে টোল প্লাজা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হবে।
খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সঙ্গে কুয়াকাটার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করবে এ সেতু। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা কক্সবাজারের চেয়ে কাছে হবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় যেতে সময় লাগবে মাত্র ৭ ঘণ্টা।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘আর মাত্র ৫ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। যা শেষ করতে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। এতে আগামী মাসের মধ্যে সেতুর সব কাজ শেষ করে খুলে দেওয়া সম্ভব হবে।’