শিশির ওয়াহিদ, যশোর ব্যুরো:
১১ বছরের শিশু হুসাইন। মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় হারিয়েছেন নিজ পিতাকে। বাবার মৃত্যুর পর শেষ আশ্রয়স্থল ছিলো নিজ জন্মদাত্রী মা। দুঃখ, কষ্ট আর অসহায়ত্বের জীবনে শেষ আশ্রয়টুকু সম্বল করে বেড়ে উঠছিলো শিশু হুসাইন। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! মাত্র তিন মাস আগে হারালো তাঁর একমাত্র আশ্রয়স্থল মা’কেও।
অসহায় শিশু হুসাইনের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়নের বাজার পাড়ায়। সে মৃত আবুল হাশেমের সন্তান ।
পিতা-মাতার অকাল প্রয়াণে অসহায় দিন কাটতে থাকে তাঁর। দু’বেলা দুমুঠো আহার জুটানোর জন্য ভিক্ষার পথ বেছে নিতে হয় শিশু হুসাইনকে। রাতে ঘুমানোর জন্য তাঁর স্থান হতো চায়ের দোকানের মাচান কিংবা ফুটপাত।
অবশেষে শিশু হুসাইনের অসহায়ত্ব ও দুরবস্থার বিষয় মহেশপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁনের নজরে আসে । তিনি নিজ দায়িত্বে শিশুটির সমস্ত খোঁজ-খবর নিয়ে ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। একইসাথে শিশুটির পড়ালেখার জন্য ভর্তি করিয়েছেন মহেশপুর হাফেজিয়া মাদরাসায়। রবিবার (২০ জুন) এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এব্যাপারে মহেশপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ছেলেটি একদিন আমার কাছে রাত্রি যাপনের অনুরোধ করে। আমি তার সম্পর্কে জানতে চাইলে শিশুটি ছলছল চোখে তার অসহায়ত্বের গল্প বলে।
আমি তার সমস্ত কথা শুনে এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা জানার পর নিজ উদ্যোগে তাকে মহেশপুর হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করে দিই, এবং যাবতীয় ভরণপোষণের দায়িত্ব নিই।”
বেশ কিছু স্থানীয় জনতা বলেন, মেয়র মহোদয়ের এমন কাজে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা দোয়া করি তিনি যেন জীবনের বাকি সময় এভাবে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকেন।”
‘অসহায় এতিম শিশুটি একটি নির্ভরযোগ্য আশ্রয় পেলো, মহেশপুর পেলো এক মানবিক মেয়র’ -ঠিক এমনই বাণী এখন সবার মুখে মুখে।