রাজশাহী ব্যুরো
মোবাইলে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পরিচয় দিয়ে কলেজছাত্রীর (১৭) সঙ্গে টানা দেড় বছর প্রেম করার পরে বিয়ে, তার এক সপ্তাহ পরে ফাঁস বাদাম বিক্রেতা পরিচয়।
প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আজ শুক্রবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ার পলাশবাড়ি গ্রাম থেকে আবদুল আলিম (৩২) নামের এ বাদাম বিক্রেতা আটক করে পুলিশ। তিনি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকিয়াপাড়া গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে।
আরও পড়ুন: “ইউরোপে মুসলিম নেই ইসলাম আছে, বাংলাদেশে মুসলিম আছে ইসলাম নেই”
মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ছাত্রীর সঙ্গে আলিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ হয়। ওই সময়ে তিনি নিজেকে পুলিশের এএসপি পরিচয় দেন এবং রংপুর রেঞ্জে কর্মরত বলেন। নিজের নাম বলেন রাসেল (৩২) এবং বাসা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায়। এরপর মুঠোফোনে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
আরও পড়ুন: ‘যে নারী পুরুষের সঙ্গে পাবলিক বাসে উঠে, ইমাম মাহাদীর বিরুদ্ধে এরাই যুদ্ধ করবে’
একপর্যায়ে বিয়ের কথা বলেন। ওই ছাত্রী তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাড়িতে আসতে বলেন। এরপর ১৮ জুন সকালে হঠাৎ করে ছাত্রীর বাড়িতে এসে হাজির হন ওই যুবক। তাঁর সঙ্গে ছিল পুলিশের মনোগ্রামসংবলিত একটি ব্যাগও। এ সময় তরুণীর পরিবারকে বলেন, পুলিশে নতুন চাকরি, বাহিনী থেকে এখনো বিয়ের অনুমতি মিলেনি। এ কারণে গোপনে বিয়ে করতে হবে। ওই যুবকের কথা বিশ্বাস করে ১৮ জুন রাতে মৌলভি ডেকে ঘরোয়াভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ছাত্রীর পরিবার।
আরও পড়ুন: তোহা আদনানের দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতো না পরিবার
এরপর কলেজছাত্রীর সঙ্গে স্বামী–স্ত্রী হিসেবে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতে থাকেন ওই যুবক। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে ওই যুবকের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রতিবেশীরাও ওই যুবককে চ্যালেঞ্জ করে। চাপে পড়ে স্বীকার করেন তিনি ‘ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা’। পরে খবর দেওয়া হয় বগুড়া সদর মডেল থানায়।
সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক বেদার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদরের পলাশবাড়ি গ্রাম থেকে ওই যুবককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তাঁর নাম, ঠিকানা, পরিচয় সবই ভুয়া।
আরও পড়ুন: চশমা ছাড়া পত্রিকা পড়তে না পারায় বিয়ে ভাঙলেন কনে, মামলা!
তিনি আর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক আরও স্বীকার করেন, তিনি পেশাদার প্রতারক। মাঝেমধ্যে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করেন। প্রতারণা করে কিশোরী ও তরুণীদের বিয়ে করা তাঁর নেশা। এ পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে তিনি পাঁচটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর পক্ষে দুটি সন্তানও রয়েছে তাঁর। তবে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বল্পবসন পুরুষ দেখলেও নারীর মন চঞ্চল হয়: ইমরান খানকে তসলিমা