প্রভাতি সংবাদ:
হাইকার্ট থেকে দেওয়া জায়েদ খানের পক্ষে আদেশের বিরুদ্ধে এবার আপিল করতে চলেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। সোমবার বিকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, নিপুণ খুব শিগগির সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করবেন।
এর আগে জায়েদ খানের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আপিল বোর্ডের নেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিপুণের সাধারণ সম্পাদকের পদও স্থগিত করা হয়।
সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
শুধু তাই নয়, জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের আপিল বোর্ডকে সেই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এবার তারই বিরুদ্ধে আপিল করতে চলেছেন নিপুণ।
টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগে গত শনিবার জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চিত্রনায়িকা নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল আপিল বোর্ড। রবিবার বিকালে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণসহ নতুন কমিটির ১০ জন শপথও নিয়েছেন।
গত ২৮ জানুয়ারি এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন। পরদিন ভোররাতে ঘোষণা হয় ফলাফল। এবার গত দুইবারের সভাপতি মিশা সওদাগরকে হারিয়ে নতুন সভাপতি হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তবে জায়েদের কাছে ১৩ ভোটে হেরে যান সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ।
কিন্তু সেই পরাজয় মানেননি নায়িকা। ফলাফল ঘোষণার দিনই তিনি আপিল বোর্ডে পুনরায় ভোট গণনার জন্য আবেদন করেন। পাশাপাশি জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন। ওইদিন পুনরায় ভোট গণনার পর আপিল বোর্ড জানিয়ে দেয়, জায়েদ খানই জিতেছেন।
তাতে হাল ছাড়েননি নিপুণ। তিনি পরবর্তীতে জায়েদ ও তার প্যানেলের আরেক জয়ী প্রার্থী চুন্নুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে এক চিঠির মাধ্যমে আপিল বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয় নিপুণের অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিতে। আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলেও চিঠিতে জানায় মন্ত্রণালয়।
এর পরই একটি বৈঠক ডাকেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। শনিবার বিকাল পাঁচটায় এফডিসিতে হয় সেই বৈঠক। সেখানে বাদী নিপুণ এবং বিবাদী জায়েদ খান ও চুন্নুকে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এদিন নিপুণ বৈঠকে হাজির হলেও এফডিসিতে পা রাখেননি দুই অভিযুক্ত।
এরপর একপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেই তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় আপিল বোর্ড। সোহানুর রহমান সোহান এদিন সাংবাদিকদের জানান, জায়েদ খান ও চুন্নুর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হলো।
পাশাপাশি এদিন সাধারণ সম্পাদক পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণ আক্তারকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে চুন্নুর জায়গায় তার প্যানেলের আরেক প্রার্থী নাদির খানকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচনের আপিল বোর্ড।