More

    ২১ বছরও হল না সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল হত্যার বিচার

    আদালত সূত্র জানা যায়, ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে সাংবাদিক শামছুর রহমান খুন হবার পর ২০০১ সালে পুলিশের সিআইডি শাখা এই মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। তৎকালীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক আসামির আগ্রহে মামলার বর্ধিত তদন্ত করে নিহত শামছুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাংবাদিক নেতা ফারাজী আজমল হোসেনকে নতুন করে আসামি করা হয়।

    যশোর ব্যুরো:

    ২১ বছরেও সম্পন্ন হয়নি যশোরের শহিদ সাংবাদিক শামছুর রহমান (কেবল) হত্যাকাণ্ডের বিচার। গত ১৬ বছর ধরে আইনের মারপ্যাঁচে আটকে রয়েছে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।

    সাংবাদিক শামছুর রহমান হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার ও যশোরের সাংবাদিক ও সচেতন সমাজ।

    এ ব্যাপারে প্রভাতী সংবাদের পক্ষ থেকে আইনজীবী’দের এই হত্যাকান্ড নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তারা জানিয়েছেন সরকারের সদিচ্ছা থাকলেই এ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরানিত করা সম্ভব।

    এদিকে সাংবাদিক শামছুর রহমান হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে)। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। এছাড়াও জে.ইউ.জে ১৬ জুলাই বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে এবারের সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ, শোক র‌্যালি, শহিদের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন ও দোয়া প্রার্থনা।

    আদালত সূত্র জানা যায়, ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে সাংবাদিক শামছুর রহমান খুন হবার পর ২০০১ সালে পুলিশের সিআইডি শাখা এই মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। তৎকালীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক আসামির আগ্রহে মামলার বর্ধিত তদন্ত করে নিহত শামছুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাংবাদিক নেতা ফারাজী আজমল হোসেনকে নতুন করে আসামি করা হয়।

    একইসাথে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে বাদ দিয়ে সাক্ষী করা হয় আসামিদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকে। এতে একদিকে যেমন মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়; অন্যদিকে দুর্বল হয়ে যায় চার্জশিট। বিতর্কিত ওই বর্ধিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ২০০৫ সালের জুনে যশোরের বিশেষায়িত জজ আদালতে এই মামলার চার্জ গঠন হয়। ওই বছরের জুলাইয়ে বাদীর মতামত ছাড়াই মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচারিক আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এমতাবস্থায় মামলার বাদী শহিদ সাংবাদিক শামছুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা আকতার লাকি বিচারিক আদালত পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আপিল করেন।

    আপিল আবেদনে সেলিনা আকতার লাকি বলেন, মামলার অন্যতম আসামি খুলনার চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী হিরক পলাতক রয়েছে। হিরক সহ সংশ্লিষ্ট মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথে খুলনার সন্ত্রাসীদের সখ্যতা রয়েছে। ফলে তার (বাদী’র) পক্ষে খুলনায় গিয়ে সাক্ষী দেয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বাদীর এই আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ‘মামলাটি কেন যশোরে ফিরিয়ে দেয়া হবে না’ তার জন্য সরকারের উপর রুলনিশি জারি করেন। এরপর মামলায় বর্ধিত তদন্তে সংযুক্ত আসামি ফারাজী আজমল হোসেন উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন। সেই রিটের নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়; যা এখনো স্থগিত রয়েছে।

    উচ্চ আদালতের নির্দেশের কারণে শামছুর রহমান হত্যা মামলার বিচার কার্য বন্ধ হয়ে আছে উল্লেখ করে যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী জানান, তাদেরও প্রত্যাশা আপিলের দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হবে।

    প্রসঙ্গত, এ মামলার চার্জশিট ভুক্ত ১৬ জনের মধ্যে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী মুশফিকুর রহমান হিরক পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছে। আরেক আসামি খুলনার ওয়ার্ড কমিশনার আসাদুজ্জামান লিটু র‌্যাবের কথিত ক্রসফায়ারে মারা গিয়েছেন।

    অন্য আসামি কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন কালু হার্টস্ট্রোকে এবং যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি গ্রামে আনারুল প্রতিপক্ষের হামলায় মারা গেছেন। বাকি আসামিরা জামিনে রয়েছেন।

    এ দিকে দীর্ঘ দিনেও চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির বিচার না হওয়ায় নিহতের পরিবার, সাংবাদিক ও সচেতন সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

    হত্যাকান্ডের ২১ তম দিবসে এ বছরও দাবি তোলা হয়েছে নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। একইসাথে পুরনো বিতর্কিত তদন্ত বাতিল পূর্বক মামলাটি পুনঃতদন্তের দাবিও জানিয়েছে নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img