নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
এরা সবাই সদর উপজেলার নারায়ণপুরে একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে গেছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হলে নৌকার সবাই নদীর ধারে একটি অস্থায়ী ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন। সেখানে হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ থেকে ১৬ জন মারা যায়। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মতো মারা গেছে বলে জানান তিনি।
বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে নৌকার মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (০৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা গ্রামে নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ২০ জনের মধ্যে ১৬ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- টকি বেগম (৩০), জমিলা (৫৮), পাতু (৪০), তবজুল (৭০), আদল (৩৫), রফিকুল (৬০),টিপু সুলতান (৪৫), লেচন (৫০), সজীব (২২),আলম (৪৫),সহবুল (৩০),বাবলু (২৬), মোছা. মৌসুমী (২৫),বেলি বেগম (৩২), বাবু (২০) ও অসিকুল ইসলাম ডাকু (২৪)।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন মাস্টার জানান, এরা সবাই সদর উপজেলার নারায়ণপুরে একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে গেছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হলে নৌকার সবাই নদীর ধারে একটি অস্থায়ী ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন। সেখানে হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ থেকে ১৬ জন মারা যায়। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মতো মারা গেছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মৃতদের মধ্যে ১৯ জন বউভাতের অনুষ্ঠানে গেছিলেন। এছাড়া বজ্রপাতে দক্ষিণ পাকা গ্রামের নৌকার মাঝি মারা গেছেন। নারী ও শিশুসহ নৌকায় ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন। এরা সবাই বৃষ্টি আসার কারনে নৌকা থেকে নেমে নদীর ধারে অস্থায়ী ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন।
এঘটনায় আহতদের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেন জানান, মৃতদের পরিচয় জানার জন্য সুর্যনারায়ণপুরে পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রাকিবসহ পুলিশের একটি দল গেছে । স্থানীয়দের ভাষ্যমতে মৃতের সংখ্যা ২০ জন হলেও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বী বিকেল ৪টায় জানান বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা ১৭ জন।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন জানান, নৌকাটি দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের ঘাটে এসে পৌঁছানোর পরেই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এঘটনায় ১৬ জন মারা গেছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, আহত সকলকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বজ্রপাতে গুরুতর আহত এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শোনা যাচ্ছে শিশুটির বাবা-মা মারা গেছেন। সকলের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহে পুলিশের টিম কাজ করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনের ফায়ার সার্ভিস উপপরিচালক সাবের আলী জানান, মৃত ও আহতদের উদ্ধার করে নৌকায় করে সদর উপজেলার আলিমনগরের ঘাটে নিয়ে আসা হয়। সেসময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কামরুন নাহার নাসু জানান,হাসপাতালে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মৃত অবস্থায় ১২ জনকে আনা হয়। এছাড়া আরও ৯ জনকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।