নিজস্ব প্রতিবেদক;
নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর ঘটনাস্থল ঢাকা বোট ক্লাবের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ থেকে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, বোট ক্লাবে ওই রাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
ভিডিও বিশ্লেষণ থেকে পুলিশ জানিয়েছে, পরীমনি প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা ওই ক্লাবে অবস্থান করেন। এরপরে তাকে ধরাধরি করে সেখান থেকে বের করা হয়।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী গণমাধ্যমকে বলেন, কালো রঙের একটি গাড়িতে ওই রাত ১২টা ২২ মিনিটে পরীমনি ক্লাবে ঢোকেন, আর বের হন ১টা ৫৯ মিনিটে।
এদিকে, পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করেছেন অমি ও নাসির। ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, পরীমনিকে পরিকল্পিতভাবেই সেখানে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন অমি। জিজ্ঞাসাবাদে পরিমনীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন নাসির।
ঢাকা বোট ক্লাবের ওই ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জুন রাত ১২ টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। নামতে দেখা যায় পরীমনি, জিমি ও অমিকে। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যদের ঢুকেতে দেখা যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন নাসির ইউ আহমেদ।
দেড় ঘণ্টা পর পরীমনিকে জিমি ও একজন নিরাপত্তা প্রহরী ধরাধরি করে বের করছেন। তাদের পেছনে ছিলেন অমি। ক্লাবে অমির কালো গাড়িতে গেলেও পরীমনি ফিরেছেন সাদা রঙের একটি গাড়িতে।
ক্লাবের ভেতরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও ১৫ সেকেণ্ডের ফুটেজে ভাঙচুর ও পরীমনিকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে শোনা যায় নাসিরকে। পরীমনির দাবি, জোর করে তাকে মদ পান করানো হয়েছিল।
পুলিশের ধারণা, পরীমনিকে নাসিরের কাছে তুলে দিয়েছিলেন অমি। পানীয়র সঙ্গে নেশাদ্রব্য খাইয়ে তাকে ধর্ষণচেষ্টা হয় সেখানে। বোট ক্লাবের সিসিটিভির ফুটেজে ঘটনার প্রমাণও মিলেছে।
গোয়েন্দারা বলছে, নাসির-অমির নারী ও মাদক কারবারে জড়িত টঙ্গীর নাজিম ও তুহিন। এ দুজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে বনানী থানার বাইরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৩টা ৫২ মিনিটে বনানী থানায় প্রবেশ করেন পরীমনি। প্রথমে তারা ডিউটি অফিসারের রুম হয়ে থানার ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে একজন অফিসার তাদের ডিউটি অফিসারের কাছে যেতে বলেন।
পরীমনি ডিউটি অফিসারের রুমে গিয়ে তার বরাবর চেয়ারে বসেন এবং ঘটনার বর্ণনা দেন। তবে ডিউটি অফিসার তার কথা বুঝতে পারছিলেন না। পরে তাকে পুলিশের একটি গাড়িতে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সোমবার পরীমনির সাভার থানায় করা মামলায় নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ছাড়া উত্তরার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেফতারের সময় মাদক উদ্ধার করা হয়।
মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অমি ও নাসিরকে মঙ্গলবার ৭ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে থাকা তিন নারীকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।