More

    উত্তরপ্রদেশে অস্বস্তিতে যোগীর বিজেপি

    প্রভাতি সংবাদ ডেস্ক:

    ভারতের উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা খেলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ২৪ ঘণ্টা না যেতেই তার মন্ত্রিসভা ছাড়লেন আরও এক প্রভাবশালী ও ওবিসি (আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) নেতা। রাজ্যের বন ও পরিবেশমন্ত্রী দারা সিং চৌহান মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

    এক দিন আগে যোগীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন আরেক ওবিসি নেতা শ্রমমন্ত্রী স্বামীপ্রসাদ মৌর্য ও দুই বিধায়ক রোশনলাল বর্মা এবং ভগবতীপ্রসাদ সাগর। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ভোট শুরুর আগে প্রভাবশালীদের এমন পদত্যাগ ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জন্য অস্বস্তিজনক বলে মত দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

    সর্ব ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু ও এনডিটিভির খবর অনুযায়ী বুধবার যোগীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন দারা সিং চৌহান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার দলিত এবং অনগ্রসরদের প্রতি অবহেলা করে চলেছে। তাই আমার এই সিদ্ধান্ত।’’

    স্বামীপ্রসাদের মতোই দারাও এ বার অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (সপা)-তে শামিল হতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

    উত্তরপ্রদেশে মসনদ দখলে এই ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) নেতারাই বিজেপির জন্য অনুঘটকের কাজ করেছেন। এবার যেন তারা পালাক্রমে বিজিপি ছাড়ছেন।

    স্বামীপ্রসাদের মতোই একদা মায়াবতী-ঘনিষ্ঠ ছিলেন দারা সিং। ২০০৯ সালে ঘোসি লোকসভা কেন্দ্রে জেতার পরে বিএসপি-র নেতাও হয়েছিলেন এই অনগ্রসর (এবিসি) জনগোষ্ঠীর নেতা। ২০১৫ সালে অমিত শাহের উপস্থিতিতে দারা বিজেপি-তে যোগ দেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে সে রাজ্যের বন ও পরিবেশমন্ত্রী হন।

    এক দিন আগে মঙ্গলবার স্বামীপ্রসাদ মন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর অখিলেশ যাদব তাকে দলে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সাম্যের জন্য লড়াই করা জনপ্রিয় নেতা শ্রী স্বামীপ্রসাদ মৌর্যজী এবং তার সঙ্গে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেওয়া অন্যান্য নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও শুভেচ্ছা জানাই। সামাজিক ন্যায়বিচারের বিপ্লব হবে বাইশেই (২০২২) হবে পরিবর্তন।’

    উত্তরপ্রদেশ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘স্বামীপ্রসাদ মৌর্যের ৭০ থেকে ৮০টি বিধানসভা আসনে প্রভাব রয়েছে৷ ফলে তিনি বিজেপি ছাড়লে সেটা যোগীর ধাক্কা তো বটেই। তবে স্বামীপ্রসাদ গত বিধানসভা ভোটের সময় নিজের অনুগামীদের জন্য ১৫টি আসন চেয়েছিলেন এবং পেয়েছিলেন৷ তার মধ্যে ১২ জন জিতেছিলেন। তার ছেলে সহ তিনজন জিততে পারেননি।”

    শরদের বক্তব্য, ‘‘এবারও ১৫টি আসন চান তিনি। কিন্তু তাকে মাত্র পাঁচটি আসন দিতে চেয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব। তাই তিনি দল ছাড়লেন। তাছাড়া তিনি যোগী মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চেয়েছিলেন। পাননি। শ্রমের মতো কম গুরুত্বের মন্ত্রক নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। তবে তার দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত মূলত অনুগামীদের জন্য আসন না পাওয়ার কারণে।”

    কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে?

    স্বামীপ্রসাদ মৌর্য দীর্ঘদিন মায়াবতীর বিএসপিতে ছিলেন। তিনি ছিলেন অঘোষিত দুই নম্বর নেতা। মায়াবতী যখনই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, স্বামীপ্রসাদ মন্ত্রী হয়েছেন। বিএসপি সরকারে না থাকলে তিনিই বিধায়কদলের নেতা হয়েছেন। তার পরিচিতি ও প্রভাব দুটোই রয়েছে।

    প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘ওবিসি বা অনগ্রসরদের একটা অংশের মধ্যে স্বামীপ্রসাদের যথেষ্ট প্রভাব আছে। তিনি অখিলেশের সঙ্গে হাত মেলালে সমাজবাদী পার্টির লাভ এবং বিজেপির ক্ষতি হতে পারে।”

    আরেক প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত মনে করেন, ‘‘গোয়ার পর উত্তরপ্রদেশে বিজেপির মন্ত্রী, বিধায়করা দল ছাড়লেন। এতদিন বিজেপিতে নেতারা যোগ দিতেন। এখন দেখা যাচ্ছে, বিজেপি যে রাজ্যে ক্ষমতায় আছে, সেখানে মন্ত্রী ও নেতারা বিরোধী দলে যোগ দিচ্ছেন। এটাও ইঙ্গিতবহ। আর উত্তরপ্রদেশে স্বামীপ্রসাদ যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা। তিনি সদলবলে বিজেপি ছাড়লে ক্ষতি তো হবেই।”

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img