নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রায় ১৬০ কোটি টাকা অর্থ পাচার মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের রাশেদুল হক চিশতীর জামিন বাতিল করেছে আপিল বিভাগ। সে ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে। জামিন বাতিল করে দ্রুত বিচার শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রাশেদুল হকের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘রাশেদুল হক চিশতীর জামিন-সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতকে দ্রুত বিচার শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে তাকে জেলেই থাকতে হচ্ছে।’
এর আগে গত ২৭ মে এ মামলার শুনানির সময় বাবুল চিশতীকেই মূল অপরাধী হিসেবে মন্তব্য করেছিল আপিল বিভাগ।
ওই দিন আদালত বলেছিল, মামলার নথি অনুযায়ী মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীই মূল অপরাধী। অপরাধ কার্যক্রমে তিনি তার পুরো পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করেছেন। পুরো পরিবারই অপরাধকাজে জড়িত।
আদালত আজ আরও কিছু ডকুমেন্ট দাখিল এবং শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছিল। আজকে শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেয়।
ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক নিজেও এই মামলার আসামি। তারা দুজনই কারাগারে।
রাশেদুল হক চিশতীকে গত ২৬ জানুয়ারি জামিন দেয় হাইকোর্ট। তবে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করে দুদক। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি রাশেদ চিশতীকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগ।
গত বছরের ১৯ মে রাশেদ চিশতীকে তিনটি মামলায় বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছিল। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রায় ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, স্ত্রী রোজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকটির ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া উদ্দিন আহমেদ এবং ব্যাংকটির গুলশান করপোরেট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও বর্তমান সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর থেকে মাহবুবুল হক চিশতী ও রাশেদ চিশতী কারাগারে।