More

    ভারতে তরুণীকে যৌনহয়রানি: ‘টিকটক হৃদয়ে’র চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    ভারতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনকারী ‘টিকটক হৃদয়’ এর সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

    মঙ্গলবার ঝিনাইদহ, যশোর ও বেনাপোলে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ।

    গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। একজন হলেন টিকটক ভিডিও বাংলাদেশ চক্রের প্রধান আশরাফুল মণ্ডল ওরফে রাফি ও তাঁর সহযোগী শাহিদা বেগম। বাকি দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি এখনও।

    আরও পড়ুন: ভারতে তরুণীকে যৌনহয়রানি: ‘টিকটক হৃদয়ে’র চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব

    র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার রাফি ‘টিকটক হৃদয়ের’ বস।

    আরও পড়ুন:  ভারতে তরুণী নির্যাতন: `টিকটক হৃদয়’ বাবুর সহযোগী সাগরের বাড়ি অভয়নগর

    রিফাদুল ইসলাম ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতনের শিকার তরুণীটিও ঢাকার এই এলাকার বাসিন্দা। রিফাদুলই তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে বছরখানেক আগে ভারতে নিয়ে যান বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে।

    আরও পড়ুন: ভাইরাল ভিডিও’তে ভারতে নৃশংস যৌন নির্যাতন শিকার তরুণী বাংলাদেশী

    ভাইরাল ভিডিও’র দুইজনের বাড়ি যশোর

    ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে দুজনের বাড়ি যশোরে। তাদের একজনের নাম আলামিন, আরেকজনের নাম তানিয়া। আলামিনের বাড়ি যশোর শহরের চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকায়। তিনি ভ্যানচালক মনু মিয়ার ছেলে। তানিয়ার বাড়ি অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায়।

    তবে র‍্যাব এদের আটক করেছে কিনা সেটা জানা যায়নি।

    ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের ভিডিওতে থাকা আলামিন ও তার কথিত স্ত্রী তানিয়াকে শনাক্ত করেন তাদের প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে আলামিন ও তানিয়ার এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

    পরিবারের সদস্যরা আলামিনকে শনাক্ত করলেও তাদের দাবি, আট মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করছে। নির্যাতনকারী ওই চক্রের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

    জানতে চাইলে আলামিনের বাবা মনু মিয়া বলেন, আলামিনের স্বভাব-চরিত্র ভালো নয়। তার কাছে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসত। তারা আমার ঘরে বসেই ইয়াবা খেতো। যে কারণে আমি আট মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিই। শুনেছি, আলামিন ভারতে গেছে, তার বউ বাপের বাড়ি। সেখানে সে কী করছে আমি জানি না, তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।

    এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, আলামিন যশোরেই দুটি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী সোহার বাড়ি যশোর শহরের রেলগেট এলাকায়। এই সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি শারমিন নামে আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করেন। এই সংসারেও তার একটি ছেলে রয়েছে। আলামিন এখন ভারতে রয়েছেন। সেখানেও কথিত এক স্ত্রী তার সঙ্গে আছেন।

    স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, স্ত্রী-সন্তান ফেলে আলামিন আট মাস আগে ভারতে চলে যান। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি গোলাপি রঙের ফুলহাতা গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট পরিহিত এবং তার পায়ে রাবারের কালো ব্যান্ড রয়েছে।

    সূত্র আরও জানিয়েছে, ভিডিওতে থাকা লাল ফুলহাতা টপস পরা মেয়েটির নাম তানিয়া। তানিয়ার বাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে। তার বড় বোন সোনিয়া ভারতে থাকেন। তানিয়ার আগেও দুটি বিয়ে হয়েছে। তানিয়াকে আলামিন স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারতে নিয়ে গেছেন। আলামিন বা তানিয়া কেউই এখনো আটক হননি। তারা ভারতের ওই এলাকায় পালিয়ে রয়েছেন।

    এদিকে ভারতের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকটক হৃদয় বাবু, আলামিনসহ এই চক্রটি ভারতের বেঙ্গালুরুর কোর্টলোর এলাকায় থাকেন। সেখানে ‘রাফি’ নামে একজনের আস্তানা রয়েছে। এই রাফির বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায়। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল মন্ডল। রাফিকে আলামিনরা ‘বস’ বলে সম্বোধন করেন।

    সূত্রটি জানায়, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আলামিন তানিয়াকে নিয়ে অবৈধপথে বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। যাওয়ার আগে তিনি চাঁচড়া এলাকার ইয়াবা বিক্রেতা কামরুলের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকার ইয়াবা কিনে নিয়ে যান। ‘অরিজিনাল মাল’ হিসেবে ইয়াবায় আসক্ত ‘রাফিকে’ উপহার দেওয়ার জন্য এই ইয়াবা তিনি বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যান। নির্যাতনে জড়িত আলামিন ও তানিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া ডালিম ও সবুজ নামে আরও দুই যুবক ছিলেন, তারাও পালিয়ে গেছেন। বেঙ্গালুরু পুলিশ তাদের খুঁজছে।

    এদিকে ভাইরাল ভিডিও নিয়ে কথা হয় চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। তারা জানান, এলাকায় এটি জানাজানি হওয়ার পর অনেকে আলামিনের পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানিয়েছেন। এটি নিয়ে বাড়ির লোকজন চাপের মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয় পুলিশও বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজখবর করছে। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

    যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, ভারতের তরুণী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনা তিনি জানেন। ওই ঘটনায় জড়িত কারও বাড়ি যশোরে, এমন তথ্য এখনো তারা পাননি। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img