পারভেজ বাবুল:
পারভেজ বাবুল:
ধরা যাক, আমার বয়স একুশ, বিয়ের বৈধ বয়স; এখন আমি যদি ত্রিশ পঁয়ত্রিশ চল্লিশ পঞ্চাশ বছরের কোনো নারীকে বিয়ে করি তাহলে কোন শালার কি? কোনো আইনে কোনো ধর্ম গ্রন্থে কি লেখা আছে — কেউ তার চেয়ে বয়সে বড়ো বা ছোট কাউকে বিয়ে করতে পারবে না ?
পৃথিবীর কোথাও লেখা আছে ? কেউ এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না–যাদের শিক্ষিকা আর ছাত্রের বিয়ে বিষয়ে এতো মাথা ব্যাথা ছিলো ! এতো এতো সাইবার বুলিং, নেতিবাচক সমালোচনা, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা ইত্যাদি কোনো সুস্থ মানুষের কাজ নয় ;
যারা সমালোচনা করেছে তারা সবাই অসুস্থ, মানসিক রোগী, সমাজের দুষ্ট কীট পতঙ্গ, গণশত্রু, পশ্চাৎপদ সমাজের অন্ধকারে বাস করা ঘুন পোকা। সেসব কারণে আমি এই সব ভন্ড মানুষদের ভন্ড সমাজ মানিনা, সমাজকে ওন / own করিনা, এই বাজে, পচা সমাজ আমার না।
আমার সমাজ হবে উন্নত চেতনার, আধুনিক, সমসাময়ীক বোধের, সকলের সম অধিকার চর্চার, নেতিবাচক আলোচনা সমালোচনা বর্জিত, প্রেমের , বিয়ের স্বাধীনতার ইত্যাদি ইত্যাদি। বিভিন্ন সময়ে আমার সঙ্গে বিভিন্ন নারী বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
আমি তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। সম্প্রতি কয়েক নারী বোন বন্ধুরা আমাকে বলেছেন, তাদের ডিভোর্সের পর আরেক পুরুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছে, শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে, পরবর্তীতে সেই সব পুরুষ দূরে সরে গেছে, বিয়েতো দূরের কথা — ভলোবাসার নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে !
এসবের সমাধান কি ? বোনদের বলেছি, সেইসব প্রতারক পুরুষের সঙ্গে আর যোগাযোগ না করতে। আরো বলেছি, প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর আগে যেকোনো নারীকে দশবার ভাবা উচিত পুরুষটি সত্যিই তার যোগ্য কিনা। বরং আমি মনে করি, যেকোনো নারীর প্রেমিক পুরুষ হতে হবে সেই নারীর চেয়ে দশ গুণ বেশি যোগ্য ; সুযোগ্য প্রেমিক পুরুষ।
প্রিয় নারীর বিপদে আপদে বুক উঁচিয়ে বলবে, আমি তোমাকে ভালোবাসি। যেকোনো বিপদে আপদে প্রিয় নারীর পাশে থাকবে আজীবন, ইহকাল পরকাল সব কালে। প্রিয় নারীকে যে পুরুষ সাপোর্ট দিতে পারে না, সাহস দিতে পারে না, সে পুরুষ প্রেমিক বা স্বামী হওয়ার যোগ্য না। প্রেম ভালোবাসা বড়ো কঠিন জিনিস।
মুখে ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয় না, ভালোবাসতে কমিটমেন্ট থাকতে হয়, দায়বদ্ধতা থাকতে হয়, প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হয়, বিশ্বাস থাকতে হয়, ভালোবাসার মানুষকে খুশি রাখতে প্রতি মুহূর্তে ভালোবাসার পরিমাণ বাড়াতে হয়; আসলে ভালোবাসার আগে ভালোবাসতে জানতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেকটি বিষয়, প্রেম যতো গভীর হোক বিয়ের আগে সেক্স করলে সেই সম্পর্ক টিকে খুব কম। বিষয়টি বহুল আলোচিত এবং প্রমাণিত। সেসব কারণে বর্তমানে ব্রেকআপ / break up এতো বেশি !
ডিভোর্স হলেই কোনো মেয়ের হতাশ হয়ে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। ডিভোর্স যে কারো যেকোনো সময় হতে পারে। সমাজের কে কি বললো, ভাবলো সেসব কানে তুললে, আমলে নিলে জীবন শেষ হয়ে যাবে।
তাই ভাবতে শিখুন আমার আপনার কোনো সমাজ নেই, আমি ছাড়া আমার আপন আর কেউ নেই, আপনি ছাড়া আপনার আপন আর কেউ নেই। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে সমাজের দরোজায় গোটা দশেক লাথি মারুন, পায়ের ব্যায়াম হবে। সমাজকে মানবেন তো মরবেন !
কারণ আমাদের ভন্ড সমাজ এবং সমাজের ভন্ড লোকেরা মানুষকে বাঁচাতে জানেনা, মারতে জানে ! সমাজ না মানলে একটুও ক্ষতি হয় না, কারণ সমাজ আমাকে আপনাকে খাওয়ায় না, পড়ায় না, কোনোই উপকারে আসে না। সমাজে ভাত দেওয়ার ভাতার নেই, সবাই কিল মারার গোসাই ! অতএব, সমাজ এবং সমাজের ভন্ড লোকদের বর্জন করুন সুখে থাকুন।
লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক,জনসংযোগ ও কমিউন্স কনসালটেন্ট, রেডিও গল্পকার ও পরিবেশ কর্মী
প্রতি মুহূর্তের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook, Twitter, Linkedin এবং Instagram পেজ