লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের কাপড় ব্যাবসায়ী চেম্বার অব কমার্স এর সাবেক পরিচালক,নআবুল কাশেম কর ফাঁকি দেওয়ায়, রাজস্ব বোর্ড তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। রাজস্ব বোর্ড (কর অঞ্চল রংপুর) চিঠির সুত্র ধরে জানা যায়, লালমনিরহাট শহড়ের পুরান বাজার এলাকার রড ও কাপড় ব্যাবসায়ী, মেসার্স নরসিংদি এন্টারপ্রাইজ, ও মেসার্স নরসিংদি আয়রন স্বত্বাধিকারী আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘদিন কর না দেওয়ায় ০৩ টি মামলা তার বিরুদ্ধে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।চলতি অর্থ বছরে নতুন করে ০৯ লক্ষ ১১ হাজার ০৬ শত ৩১ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ পায় তার বিরুদ্ধে রাজস্ব বিভাগ।
রাজস্ব বিভাগ(কর অঞ্চল রংপুর) গত ৪ঠা অক্টোবর একটি আদেশে আবুল কাশেমের সকল ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয়। যাহার নথি নং -ব্যাংক জব্দ/সাঃ ১০/২০২২-২০২৩। ঐ নির্দেশে আবুল কাশেমের সকল ব্যাংক হিসেবে আর্থিক লেনদেন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি সমর্থিত এই ব্যাবসায়ী আবুল কাশেম আশির দশকে নরসিংদি থেকে লালমনিরহাট আসেন, সে সময় বাবুর হাট থেকে শাড়ি, লুঙ্গি এনে লালমনিরহাটের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি শুরু করেন।
আশির দশকের গোড়ায় বাংলাদেশের তৈরী পলেষ্টার থান কাপড় ভারতে ব্যাপক বাজার পায়,লালমনিরহাট থেকে এসব থান কাপড় মোগলহাট,বালারহাট গোরক মন্ডল ,ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে যাওয়া শুরু করে।ব্যাপক লাভ ও চাহিদা থাকায় এই থান কাপড় নরসিংদি থেকে এনে পাইকারি দেওয়া শুরু করেন আবুল কাশেম,এতে অল্প দিনে তার ভাগ্য ফিরে যায়।
নব্বই দশকের শুরুতে প্রথমে একটি কাপড়ের দোকান দিয়ে বসেন,তারপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দোকান থেকে প্রতি রাতে শত শত বেল থান কাপড়, পলেষ্টার, গরদ, মশারির কাপড় সহ টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতে পাঠিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেন আবুল কাশেম।
পুরান বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ইস্টার্ন বার্মার পরিবেশক মতিয়ার রহমান মতি মৃত্যু বরন করলে, তার সন্তানদের কাছ থেকে তেলের পাম্পের ঐ জায়গা নাম মাত্র মুল্যে ক্রয় করে নেন।সেখানে একটি ইমারতের নীচে জেলার সবচেয়ে বড় কাপড়ের পাইকারি দোকান মেসার্স নরসিংদি এন্টারপ্রাইজ, পাশাপাশি মেসার্স নরসিংদি আয়রন নামে রড ও স্কাপের পাইকারি দোকান গড়ে তুলেন।
পুর্ব থানাপাড়া উপজেলা রোডে ডুপ্লেক্স চারতলা বাড়ী নির্মান শেষ হবার পথে, এছাড়া সাপটানা রোডে অতিথি ক্লিনিকের পাশে একটি বাড়ী, লালমনিরহাট বসুন্ধরা এলাকায় একটি বাড়ী সহ ঢাকায় ফ্লাট রয়েছে বলে আয়কর বিভাগের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে।
ব্যাবসায়ী আবুল কাশেমের সাথে এই প্রতিবেদক কথা বললে তিনি জানায়,কর ফাঁকির মামলা আমাদের কাছ বিষয় না, এই মামলা আমার নেত্রী বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে আছে, মামলা রায় হলে টাকা দিব আমি।আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে সেটা আদালতে মোকাবেলা করছি আমি।
অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে আয় বহির্ভূত অঢেল সম্পদের মালিক ব্যাবসায়ী আবুল কাশেম, রাজস্ব ফাঁকি দিতে নানা পথ অবলম্বন করেছেন। অথচ দেশের অর্থনীতির ফুসফুস রাজস্ব আদায়।
সরকারের কোষাগারে রাজস্ব জমা না দিয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।বিলম্বে হলেও দেশ বিরোধী এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের সরকার চিহ্নিত করেছে। আয়কর বিভাগ কর ফাঁকি দেবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করায় সাধারন মানুষ স্বস্তি বোধ করছেন।
প্রতি মুহূর্তের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook, Twitter, Linkedin এবং Instagram পেজ