প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক:
বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো সদ্য পতিত অ্যান্টার্কটিক বরফে মাইক্রোপ্লাস্টিক পেয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ অ্যান্টার্কটিকার ১৯টি সাইট থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। প্রতিটি সাইট থেকে সংগৃহিত নমুনায় ছোট ছোট প্লাস্টিকের টুকরো পাওয়া গেছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক প্লাস্টিক সামগ্রীর ক্ষয় থেকে উদ্ভূত হয়। চালের দানার চেয়েও ছোট – কখনও কখনও খালি চোখে দেখা যায় না। গবেষকরা প্রতি লিটার গলিত তুষারে গড়ে ২৯টি কণা খুঁজে পেয়েছেন।
তারা ১৩টি বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন। সবচেয়ে সাধারণ ছিল পলিথিন টেরেফথালেট যা বেশিরভাগ কোমল পানীয়ের বোতল এবং পোশাকে ব্যবহৃত হয়। ৭৯% নমুনায় এটি পাওয়া গেছে।
গবেষক অ্যালেক্স আভেস ক্রায়োস্ফিয়ার জার্নালে লিখেছেন,
“এই বায়ুবাহিত মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলির সবচেয়ে সম্ভাব্য উৎস হল স্থানীয়় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রগুলি।”
পূর্ববর্তী গবেষণায় অ্যান্টার্কটিক সমুদ্রের বরফ এবং পৃষ্ঠের জলে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ পাওয়া গেছে। তবে তাজা তুষার ক্ষেত্রে এটি প্রথম রিপোর্ট করা ঘটনা।
গত বছর প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে প্রায়শই ধুলো, বাতাস এবং সমুদ্রের স্রোত দ্বারা পরিবাহিত হয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলি সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
২০২০ সালে গবেষকরা মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ার কাছে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন। গভীর মহাসাগরেও এদের পাওয়া গেছে। এই ধরনের দূষণের স্থানীয় এবং ব্যাপক উভয় প্রভাব থাকতে পারে।
এই গবেষণায় জড়িত ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক লরা রেভেল বলেছেন,
“মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলির ক্ষতিকারক পদার্থগুলি তাদের পৃষ্ঠের উপর আটকে থাকতে পারে যেমন ভারী ধাতু, শেওলা।”
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন যে মানুষ বায়ু, জল এবং খাবারের মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক শ্বাস নেয় এবং গ্রহণ করে। মানব স্বাস্থ্যের উপর তাদের প্রভাব সম্পর্কে খুব বেশি গবেষণা করা হয়নি।
তবে গত বছর Hull York Medical School এবং Hull University এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মানবদেহে উচ্চ মাত্রায় গৃহীত মাইক্রোপ্লাস্টিক কোষের মৃত্যু এবং এলার্জি প্রতিক্রিয়াসহ ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। মাইক্রোপ্লাস্টিকও বিশ্ব উষ্ণায়নেও প্রভাব বাড়াচ্ছে।