More

    আজ দশম রমজান : রমজানুল মোবারক

    অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক:

    আজ মাহে রমজানের ১০ম দিবস। বিদায় রহমতের ১০ দিন। এ যেন মুমিনের কলিজায় একটি বড় আঘাত। কারণ এ একটি করে সিয়ামের মজা উপলব্ধির জন্য মুমিনরা বাকি ১১ মাস অধীর চিত্তে অপেক্ষা করেন। এ মাস আসার আগ থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সিয়াম সাধনার সুযোগ দানের জন্য খোদা তাআলার কাছে ফরিয়াদ জানান, মোনাজাতে রোনাযারী করেন। কারণ, মৃত্যু কোন বয়স মানে না। যে কোন সময় যে কারও তলব আসতে পারে। বিষয়টি চিন্তা করে বহু মুমিন মুসলমান সিয়াম সাধনার মাধ্যমে জীবনকে শেষ বারের মতো মহামহিম প্রভুর দরবারে পেশ করার নিয়ত করেন। আর এমনিতেই সিয়ামের মাসের পূর্ণ কর্মসূচী স্মৃতিময় ইবাদতগুলো শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত যে কাউকে নাড়া দেয়। ওই যেমন, ইফতার গ্রহণের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, তারাবীর সালাতের মুবারক জামাত, সেহেরি গ্রহণের ভিন্ন এক আমেজ, সবশেষে ঈদ উপলক্ষে সর্বত্র নতুনত্বের প্রাদুর্ভাব। সবকিছুই হৃদয় ছোঁয়া। তাই এ মৌসুম কোনমতেই ভোলার নয়। এছাড়া ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হলো রমজানের সিয়াম পালন করা। এটি মূলত আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার হুকুমদারী করা। কিন্তু এরপরও এ মাসের সিয়াম সাধনার ফলে রোজাদার ইহ-পরকালে বহুবিধ আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। এ মাসে দিনভর উপবাসব্রত পালন ইফতার ও সেহেরি অনুষ্ঠান, তারাবী ও তিলাওয়াত প্রভৃতি সর্বক্ষেত্রে মু’মিনদের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্তিতে বলীয়ান করে তোলে এবং এ সবের বরকত ও উপকারিতা তাদের দোজাহানে সৌভাগ্য মন্ডিত করে। আল্লাহ

    সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন-

    হে মু’মিনগণ ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হলো যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর দেয়া হয়েছিলÑ যাতে তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পার।’ বস্তুত আয়াতে বর্ণিত পরহেজগারি বা তাকওয়া হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। রমজান মুসলিম দুনিয়ায় নানা অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সে বিশেষ গুণ ও বৈশিষ্ট্য অর্জনের আশীর্বাদ নিয়ে আসে। হাদীসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, এ মাসে কোন লোক যদি কোন নফল ইবাদত করে তবে তার সাওয়াব বা শুভ পরিণতি হবে অন্য মাসের ফরজের সমতুল্য। আর এ মাসের একটি ফরজের সাওয়াব অন্যান্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায়ের সাওয়াবের সমতুল্য। এ মাস ধৈর্যের। আর ধৈর্যের প্রতিদানই হলো জান্নাত। এ মাস পরস্পরের মধ্যে সহানুভূতি প্রকাশের। এ মাসে মু’মিনের রিজিক বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে তার গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে এবং তাকে দোযখ থেকে নাজাত দেয়া হবে, রোজাদারের রোজার সমান সাওয়াবও পাবে তবে রোজাদারের সাওয়াবের কোন কমতি হবে না..।’

    Image 10000 43
    আজ দশম রমজান : রমজানুল মোবারক

    পরকালীন পুরস্কার আর খোদার দীদারই নয় শুধু রোজার মাসের আশীর্বাদ। রমজানের মর্মবাণী আদর্শ সমাজ, আদর্শজীবন গঠনেও এক অপরিহার্য প্রশিক্ষণ হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। রমজান মানুষকে ত্যাগ শেখায়, সুখ-দুঃখের অনুভূতি জাগায়। বলা হয়েছে রমাজানে যখন কোন ব্যক্তি গায়ে পড়ে ঝগড়ায় আসে তখন যেন বিনীতভাবে রোজাদার আরজ করে : ছুমতু লির রাহমান… ভাই আমি যে রোজাদার ! দয়াময় প্রভুর নামে মৌনতা অবলম্বন করেছি, সুতরাং আজ তর্কাতর্কি নয়, নয় বাড়াবাড়ি……।’ ইসলামের এ শিক্ষা, রমজানের এ দর্শন বাকি এগারো মাসে প্রতিফলিত করা গেলে সমাজের চেহারায় নিশ্চয় স্বর্গীয় আবরণযুক্ত হবে। যারা আত্মনিবেদন করে সিয়াম পালন করে তাদের দ্বারা মানুষ ক্রমাগত উপকৃত ও আশ্বস্তই হবে।

    সূত্র: দৈনিক জনকন্ঠ, প্রকাশিত-১২/০৪/২০২২

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img