More

    আজ তৃতীয় রমজান : রমজানুল মোবারক

    অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক:

    আজ মাহে রমজানুল মোবারকের ৩য় দিবস। এ মাহে রমজানে মনকাড়া নানা আয়োজন উপভোগে রাতদিন মুমিন মন থাকে মশগুল। আপনি রমজানের মৌসুমে জনপদের যে প্রান্তেই অবস্থান করুন, ভোর রাতে নানা ধরনের গজলের সুর কানে আসবেই।

    মুসলিম শিশু-কিশোর স্বেচ্ছাসেবী দল, মসজিদ কমিটি কিংবা মুয়াজ্জিন খাদিমগণ নানা কোরাস তুলে, ঘণ্টাধ্বনি কিংবা সাইরেন দিয়ে সেহেরি গ্রহণের জন্য রোজাদারদের নিদ্রাভঙ্গে প্রয়াস চালায়।

    যেমন কোথাও কোথাও কিশোররা মসজিদের মাইক থেকে ভোররাতে গেয়ে উঠে- রমজানেরই রাতের শেষে/ ঘুমিয়ে কেন তুমি এখন সেহেরির যে সময় হলো/ উঠো উঠো মুমিনগণ। টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়াগুলোও সেহেরি অনুষ্ঠানকে উপভোগ্য করার জন্য নানা অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে থাকে।

    সেহেরি অর্থ কোন কিছু পানাহার পূর্বক প্রত্যুষে সুবহে সাদিকের আগে রোজার শুভ সূচনা করা। (আমাদের অনেকে সেহেরিকে ‘সেহেরী’ বলে, এটা শুদ্ধ নয়। তবুও এটা প্রচলন হয়ে আছে)। উল্লেখ্য, সেহেরি/সেহেরী ভোররাতে নিছক একটি খানাপিনার আয়োজন নয়।

    Image 10000 16
    সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী

    এটি ইসলাম ধর্মে ইবাদতের মধ্যে শামিল। এ এক পবিত্র মুহূর্ত। আল কোরানে এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে- তোমরা পানাহার কর, যে পর্যন্ত তোমাদের জন্য সাদা সুতো কালো সুতো হতে সুস্পষ্ট না হয়।’ – (সূরা বাকারা) রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন তোমরা সেহেরি খাও। কেননা এতে বড় বরকত নিহিত।’ – সহীহ বুখারী।

    বিখ্যাত সাহাবী হযরত জায়িদ ইবনে সাবিত (রা) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমরা প্রিয় নবী হুজুরে কারীম (স)-এর সঙ্গে সেহেরি খেয়েছি। পরে তিনি ফজরের নামাজ পড়েছেন।

    সাহাবী জায়েদ (রা) স্মৃতি রোমন্থনের সময় একজন জানতে চাইলেন তখন আজান ও সেহেরির মধ্যে কতটুকু ব্যবধান ছিল? উত্তরে হুজুরের এ প্রখ্যাত সাহাবী জানালেন ৫০ আয়াত তিলাওয়াত করতে যে সময় লাগে সে সময় পরিমাণ।’ রাসূলে আকরাম (স) অন্যত্র বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা ও তার ফিরেস্তারা সেহেরি গ্রহণকারীর ওপর রহমত ও দোয়া প্রেরণ করেন।-(ফাজায়েলে তাবরানী)।

    সুতরাং আমরা যেন সেহেরি অনুষ্ঠানকে রমজানের পালনীয় একটি অন্যতম সুন্দর অনুষঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করি। কোন ধর্মীয় ব্যাপারে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি কিংবা কৃত্রিমতার আশ্রয় নেয়া উচিত নয়।

    আল্লাহ পাক বান্দাকে শুধু উপোস রেখে পরীক্ষা করতে চান তা নয়, পবিত্র ও হালাল পন্থায় পানাহারের যে তাগিদ রয়েছে সেহেরির প্রতি ইসলামের উৎসাহ প্রদান সে ইঙ্গিত বহন করে।

    মহানবী হযরত মুহম্মদ (স) তো স্পষ্টতই বলে ফেলেছেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবদের রোজার পার্থক্য হচ্ছে সেহেরি খাওয়া নিয়ে।’ (ইমাম মুসলিম হাদিসটি আমর ইবনুল আসের (রা) উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন)।

    সেহেরি যথাসম্ভব দেরি করে খাওয়া ভাল। তবে এত দেরি করা উচিত নয় যে, যখন সুবহে সাদিক হওয়ার আশঙ্কা হয়। কেউ যদি সেহেরি খুব জলদি খায়, কিন্তু তারপর পান-চা, পানি ইত্যাদি অনেকক্ষণ পর্যন্ত খেতে থাকে এবং সুবহে সাদিক হওয়ার অল্প পূর্বে কুলি করে ফেলে তবুও দেরি করে খাওয়ার সওয়াব পাওয়া যাবে।

    আর যদি কারও রাতে ঘুম না ভাঙ্গে এবং সে জন্য সেহেরি খেতে না পারে- তখন সেহেরি না খেয়ে রোজা রাখবে। সেহেরি না খাওয়ার কারণে রোজা ছেড়ে দেয়া বড়ই কাপুরুষতার লক্ষণ। আমরা যেন এসব বিধি বিধান পালনে সতর্ক হই, তাহলেই আল্লাহ তায়ালার রহমতের যে বারিধারা এ মৌসুমে প্রবহমান তা আমাদের সিক্ত করবে।

    সূত্র: দৈনিক জনকন্ঠ, প্রকাশিত-০৫/০৪/২০২২

    © এই নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    / month
    placeholder text

    সর্বশেষ

    রাজনীাত

    বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বিদেশে হাসপাতাল খোজা হচ্ছে

    প্রভাতী সংবাদ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন আবেদনে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক...

    আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

    আরো পড়ুন

    Leave a reply

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    spot_imgspot_img