নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মেট্টোরেলের প্রতিটা কোচ হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি কোচের দুপাশে মোত চারটি করে দরজা থাকবে। যাত্রা পথে ১৭টি স্টেশনে ট্রেন থামবে। স্টেশনে ট্রেন আসার সাথে সাথেই একপাশের দরজা খুলে যাবে। রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের সাথে সমন্তরালভাবে ট্রেন দাঁড়াবে। এ কারণে মেট্রো ট্রেনে উঠতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালনাধীন ট্রেনের মতো কোন সিঁড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।
রাজধানী ঢাকায় নির্মানাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ প্রায় ৬৮ শতাংশ এগিয়ে গেছে।তবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশে কাজ এগিয়েছে আরো বেশি। এখানে ৮৭ দশমিক ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রো রেলপথ নির্মিত হচ্ছে । খুঁটির ওপর বসানো এই রেলপথের মতিঝিল পর্যন্ত দুরত্ব ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার । পরবর্তীতে মতিঝিল থেকে এই রেলপথ কমলাপুর পর্যন্ত বাড়ানো হবে। সব মিলিয়ে ২১ কিলোমিটার মেট্রো রেলপথ দেখবে বাংলাদেশ । এ রেলপথে মোট ১৭টি স্টেশন থাকবে। নির্মানাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ প্রায় ৬৮ শতাংশ এগিয়ে গেছে।
ঢাকার মেট্রো রেলপথে চলাচল করা ট্রেনগুলো যখন স্টেশনে দাঁড়াবে তখন সেটা প্লাটফর্মের সমতলে থাকবে। এ কারণেই মেট্রো ট্রেনে কোন সিঁড়ি থাকছেনা। মানুষ সমন্তরাল্ভাবে সিঁড়ি ছাড়াই ট্রেনে উঠবে। মেট্রোরেল প্রকল্পের অধীনে প্রথম ট্রেনচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মেট্টোরেলের প্রতিটা কোচ হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি কোচের দুপাশে মোত চারটি করে দরজা থাকবে। যাত্রা পথে ১৭টি স্টেশনে ট্রেন থামবে। স্টেশনে ট্রেন আসার সাথে সাথেই একপাশের দরজা খুলে যাবে। রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের সাথে সমন্তরালভাবে ট্রেন দাঁড়াবে। এ কারণে মেট্রো ট্রেনে উঠতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালনাধীন ট্রেনের মতো কোন সিঁড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত মেট্রোরেলের দুটি ট্রেন সেট ঢাকায় এসেছে। এগুলো পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু করা হবে। তবে তার আগে কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে। তার কয়েকজন সহকর্মী এসব কাজ করছেন। নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম নিজেও মেট্রো ট্রেনে উঠে দেখেছেন।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটা রেলস্টেশনে তিনটি করে তলা (ফ্লোর) থাকবে। নারী ও পুরুষ যাত্রীদের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টার থাকবে দ্বিতীয় তলায় । দ্বিতীয় তলার কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীরা তৃতীয় তলায় যাবেন। সেখান থেকেই যাত্রীরা ট্রেনে উঠবেন। অপেক্ষা করার জন্য আলাদা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা থাকবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর স্টেশনে ট্রেন আসবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামে বাংলাদেশের জন্য মেট্রো ট্রেন সেট তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রো রেলপথে চলাচলের জন্য ইতোমধ্যে তারা দুটি ট্রেন সেট ঢাকায় পাঠিয়েছে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে আরও দুটি সেট ট্রেন ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে জাপানে ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করা হবে । এরইমধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, গত ২২ জুন জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে একটি জাহাজে করে দুটি ট্রেন নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। প্রায় একমাস পরে জাহাজটি গত ২০ জুলাই মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছে। তারপর গত ২২ জুলাই ট্রেন সেট দুটি মোংলা বন্দরে চারটি বার্জে নামানো হয়। এখন শুল্ক ও ভ্যাট সম্পর্কিত প্রক্রিয়া শেষ করার কাজ চলমান। আশা করা যায় আগামী মাসের (আগস্টের) তৃতীয় সপ্তাহে বার্জযোগে মেট্রো ট্রেন সেটগুলো ঢাকায় উত্তরার ডিএমটিসিএল ডিপোতে এসে পৌঁছাবে।
ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন এন ছিদ্দিক বলেন, করোনাকালেও মেট্রোরেল নির্মানের কাজ থেমে নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এমআরটি লাইন-৬ বা দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ঢাকায় দুটি মেট্রো ট্রেন সেট আনা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর আগে ডিপোর ভেতরে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চলছে।
মেট্রোরেল বাংলাদেশের জন্য একসময় স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা অতি দ্রুতই তারা মেট্রোরেলের যাত্রী হতে পারবে।
আলহামদুলিলাহ কিছু দিন পর হয়তো আমরা মেট্রো রেল এ চড়তে পারবো ইনশাআল্লাহ ,এবং ঢাকা শহরের যান জোট আরো কমবে